পঁচাত্তরের পর ক্ষমতা জনগণের হাতে নয়, ক্যান্টনমেন্টে বন্দি হয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘একবিংশ শতাব্দীতে দক্ষিণ এশিয়ার সাংবিধানিক আদালত: বাংলাদেশ ও ভারত থেকে শিক্ষা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রথম থেকেই ছিলো। আর পাকিস্তান আমল ও পঁচাত্তরের পরের বাংলাদেশ পেয়েছে সামরিক স্বৈরশাসক। মানুষের ভোট ভাতের অধিকার ছিলো না। মানুষ শোষিত ও বঞ্চিত হয়েছিলো।
এসময় ভারতবাসীকে ‘সৌভাগ্যবান’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত ছিলো। আরা বাংলাদেশ বারবার এসেছে অমানিশার অন্ধকার। উর্দি পরে ক্ষমতা দখল করে অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার চেষ্টা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকে দেশে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে। এটাই প্রমাণিত সত্য যে ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে উন্নয়ন সম্ভব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের মৌলিক, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনও স্বাধীন করা হয়েছে। জাতির পিতা সবসময় স্বাধীন বিচার বিভাগে বিশ্বাস করতেন। তার আদর্শ নিয়েই আমাদের পথচলা। স্বাধীন বিচার বিভাগ, শক্তিশালী পার্লামেন্ট এবং প্রশাসন একটি দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পারে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমি চাই দেশের মানুষ ন্যায়বিচার পাবে, কেউ যেনো পনেরোই আগস্ট স্বজনহারা আমাদের মতো বিচারহীনতায় না ভোগে। সংবিধানে বিচার পাওয়ার অধিকার সবারই আছে। ১৫ আগস্ট আমার যারা আপনজন হারিয়েছি, তাদের ক্ষেত্রে বিচারের বাণী নিভৃতে কেঁদেছে। ন্যায় বিচার পেতে আমাকেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে হয়।
তিনি বলেন, পঁচাত্তরের পর এদেশের ক্ষমতা জনগণের হাত থেকে, ক্যান্টনমেন্টে বন্দি হয়। প্রায় ২১ বছর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষমতা সামরিক শাসকদের হাতে বন্দি ছিলো। সংবিধান লংঘন করে ক্ষমতা দখল যে অসাংবিধানিক এবং অসাংবিধানিক ও অনির্বাচিত কেউ ক্ষমতায় থাকতে পারে না; সেটা অবৈধ, উচ্চ আদালত তার রায়ে সেই ঘোষণা জারি করে বাংলাদেশের আদালত জনগণকে নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ করে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী গণতন্ত্রকে সুসংহত করেছে। উচ্চ আদালতের রায় অনুসরণ করে জনগণের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত করা হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতের পাশাপাশি নির্বাচন প্রক্রিয়া ও কমিশনের স্বাধীন করেছি আমরা, যেনো তারা মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেতে পারি।