বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি দুই দিনের সফরে ঢাকা পৌঁছেছেন।
সোমবার বিকেল পাঁচটায় কাতারের আমিরকে বহনকারী উড়োজাহাজ ঢাকায় অবতরণ করে। বিমানবন্দরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতারের আমরিকে অভ্যর্থনা জানান।
বিমানবন্দরে শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। কাতার এয়ার ওয়েজের বিশেষ ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছালে ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে আমিরকে স্বাগত জানানো হয়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসনরুল হামিদ, তিন বাহিনীর প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
জ্বালানি সমৃদ্ধ দেশটির রাষ্ট্রপ্রধানের এই সফরকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ মনে করছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নতুন সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ থেকে এটিই প্রথম উচ্চপর্যায়ের সফর।
গত দুই দশকের মধ্যে কাতারের কোনো আমিরের বাংলাদেশে এটিই প্রথম সফর। ২০০৫ সালে কাতারের তৎকালীন আমির হামাদ বিন খলিফা আল থানি বাংলাদেশে এসেছিলেন।
কাতারের আমিরের ঢাকা সফরের সময়ে ১১টি দলিল সই হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে রোববার জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
১১টি দলিলের মধ্যে ছয়টি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক। চুক্তিগুলো হচ্ছে দ্বৈতকর পরিহার, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা, সাগরপথে পরিবহন, বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি, ও যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি।
সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে শ্রমশক্তি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, বন্দর পরিচালনা, উচ্চ শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়া সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা।
সফরের তাৎপর্য বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাতার মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার যেখানে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। যেহেতু কাতার জ্বালানি সমৃদ্ধ দেশ, বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় এই সফর গুরুত্বপূর্ণ।
বঙ্গভবন থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন কাতারের আমির। পরে রাষ্ট্রপতির দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অংশ নেবেন।
মঙ্গলবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাতারের আমিরের বৈঠকের কথা রয়েছে। এ সময় চুক্তি ও সমঝোতাগুলো সই হবে।
কাতারের আমিরের সম্মানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন মিরপুরের কালশীর বালুর মাঠে নির্মিতব্য পার্ক ও মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী উড়াল সেতু পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ করা হবে। মঙ্গলবার তিনি নিজেই এই পার্ক ও সড়ক উদ্বোধন করবেন।
সফর শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাতারের আমির ঢাকা ছাড়বেন।