তথ্য-প্রযুক্তি

ইন্দোনেশিয়ার কারণে ইন্টারনেটের গতি ফিরতে সময় লাগবে এক মাস

দেশের ইন্টারনেটের গতি স্বাভাবিক হতে অন্তত এক মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছে সাবমেরিন কেবলস কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ইন্দোনেশিয়ার জলসীমায় সাবমেরিন ক্যাবল কাটা পড়ায় সেটি মেরামত করতে দেশটির অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

ইন্টারনেট সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, চলতি মাসেই অন্তত একশ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন তারা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রাহকের নানা জিজ্ঞাসার জবাব দেওয়ার সফটওয়্যার, জিরোসিয়াম। ই-কমার্স ও এফ-কমার্স প্রোডাক্ট স্পেশালিস্ট সামিহা রাহমান শনিবার দুপুরে হঠাৎ খেয়াল করলেন ইন্টারনেট প্রায় গতিহীন।

শতশত গ্রাহকের হাজারো পণ্যের আপডেট ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না। ফলাফল পুরো ই-কমার্স প্লাটফর্মের কর্মকাণ্ডে তৈরি হয়েছে গতিহীনতা। আর্থিক ক্ষতিটাও অন্তত ২০ শতাংশ।

সামিহা রহমান  বলেন, আমাদের পুরো ইকো-সিস্টেম ইন্টারনেট বেইজড। ইন্টারনেটের গতির কারণে আমরা ধারণা করছি আমাদের রেভিনিউ ২০-৩০ শতাংশ কম হবে।

সংকটের শুরুটা শুক্রবার মধ্যরাতে। ইন্দোনেশিয়ার জলসীমায় কাটা পড়ে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবেল সিমিউই-৫। ফলে বন্ধ হয়ে যায় ১৭০০ জিবিপিএস ব্যান্ডইউথ। পাঁচ হাজার দুইশ জিবিপিএস চাহিদার বিপরীতে ইন্টারনেটের ঘাটতি এখন প্রায় ৩৩ শতাংশ। এই চাহিদা মেটাতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে দেশে ইন্টারনেট অপারেটরর। পাঁচ হাজার কোটি টাকার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের বাজারে চলতি মাসেই ক্ষতিটা শত কোটি টাকার।

সারা দেশে ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইডথ আসে মূলত গভীর সমুদ্রের মধ্য দিয়ে আসা দুটো সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে। বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন কেবল সি-মি-উই-৪ এর ল্যান্ডিং স্টেশন কক্সবাজারে। আর দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল সি-মি-উই-৫ ঢুকেছে কুয়াকাটা হয়ে।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি (আইএসপিএবি) ইমদাদুল হক বলেন, সাবমেরিন কেবলস কোম্পানি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় তাদের সেবা বিস্তৃত করেছে। দেশের মূল জেলাগুলোর তাদের যাওয়া উচিৎ। সাবমেরিন কেবলস কোম্পানিকে এই জায়গায় ফ্রিডম দেওয়া উচিৎ, তারা যাতে সারা দেশে সেবা নিয়ে যেতে পারে।

শুধু বাংলাদেশ নয় ১৬টির বেশি দেশ এমন জটিলতায় পড়েছে। ইন্দোনেশিয়া সরকারে অনুমোদন পেতেও সময় লাগতে পারে মাস খানেক।

বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা কামাল আহম্মদ বলেন, ইন্দোনেশিয়ার সরকারের অনুমতি পেতে তিন থেকে চার সপ্তাহ লাগবে। ধারণা করা হচ্ছে মে মাসের শেষের দিকে এটি মেরামত হবে।

ইন্টারনেটের ঘাটতি  আপাতত প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল সিমিউই-৪ দিয়ে পূরণের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

দেশের মোট ব্যান্ডউইথ ব্যবহার এখন পাঁচ হাজার জিবিপিএস। দুই সাবমেরিন ক্যাবলের বাইরে প্রায় দুই হাজার ৭০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আন্তর্জাতিক টেরেস্ট্রিয়াল কেবল (আইটিসি) মাধ্যমে স্থল সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা হয়।

২০২৫ সালের মধ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সি-মি-উই ৬ থেকে আরও ১৩ হাজার ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ যুক্ত হবে।

এ সর্ম্পকিত সংবাদ

Back to top button