রাজধানীর মিরপুরে অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দুপুর পৌনে তিনটার দিকে মিরপুর বেনারসি পল্লীর ৪ নম্বর সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া কালশী মোড় এলাকায় একটি পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের ঘোষণার প্রতিবাদে রোববার সকাল থেকে মিরপুর-১, ১১, কালশী এবং ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত রোকেয়া সরণী বিভিন্ন অংশে অবস্থান নেয় চালকরা।
দুপুরে আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন আন্দোলনকারীরা। এরই পরই কয়েকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর পৌনে ৩টার দিকে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় আসেন ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা। তিনি আন্দোলনকারীদের সড়ক ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন এবং অটোরিকশা চলাচলের বিষয়ে আলোচনার আশ্বাস দেন। তার আশ্বাসে চালকদের একটি অংশ আন্দোলন শেষ করে ফিরতে সম্মত হয়।
তবে শেওড়াপাড়া থেকে আসা শ্রমিকদের একাংশ লাঠি হাতে হই-হুল্লোড় করে এসে আবারও অবরোধ শুরু করে। এসময় পুলিশ তাদের সরে যেতে বললে তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় শেওড়াপাড়া দিয়ে মিরপুরের দিকে আসা অটোরিকশা চালকদের একটি অংশ ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে এবং লাঠি নিয়ে পুলিশকে ধাওয়া দেয়।
সবশেষ বিকেল সোয়া তিনটার দিকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে বিকেলে কালশী মোড়ের সড়ক অবরোধ করে আবারও বিক্ষোভ শুরু করেন অটোরিকশা চালকরা। এসময় একটি পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। ফলে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।
গত ১৫ মে ফিটনেসহীন বাস ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের নির্দেশ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত কোনো গাড়ি (তিন চাকার) যেনো ঢাকা সিটিতে না চলে।
রাজধানীর প্রায় সব জায়গায় এতোদিন দাপটের সাথে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, মুগদা, বাসাবো, খিলক্ষেত, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার অটোরিকশা চলাচল করছে।
রাত হলেই গলিপথ ছেড়ে রাজপথ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব রিকশা। অনিয়ন্ত্রিত এই বাহনের কারণে পাড়া মহল্লাতেও লেগে থাকে যানজট।
রাজধানীসহ সারাদেশেই বিশৃঙ্খল সড়ক পরিস্থিতির অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে অনিয়ন্ত্রিত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ জট ও দুর্ঘটনা ঘটছে এই যানবাহনের কারণে।
তবে হঠাৎ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের নির্দেশে বিপাকে পড়ে যায় চালকরা। আর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে আরও নানা উপখাত। সব মিলে এই খাত ঘিরে গেলো কয়েক বছরে নীরবেই গড়ে উঠেছে লাখো মানুষের কর্মসংস্থান, চিন্তায় পড়েছেন তারাও।




















