পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ও র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বিদেশে চলে গেছেন কি না তা জানেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, যদি কেউ অন্যায় করে তাকে শাস্তি পেতে হবে।
শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) ছাত্রলীগ আয়োজিত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক বক্তৃতা প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি কেউ অন্যায় করে তাহলে তার শাস্তি বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী হবে। তার বিষয়ে তদন্ত চলছে। তিনি অন্যায় করেছেন না কি নির্দোষ, তিনি কি কর ফাঁকি দিয়েছেন না কি অন্যভাবে অর্থ সম্পদ গড়েছেন, সেটা তদন্ত শেষ হলে সে অনুযায়ী তার বিচার করা হবে।
তদন্ত চলমান অবস্থায় একজন আইজিপি বিদেশ চলে যেতে পারেন কি না জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, সে এখনো দেশে আছে নাকি বিদেশ চলে গেছে এটা আমি জানি না।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পদ নিয়ে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তিনি ও তার স্ত্রীর শত শত কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে আলোচনা ওঠে। এর বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের পরপরই দুদক থেকে জানানো হয়, বেনজীর আহমেদের সম্পদের বিষয়ে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে।
গণমাধ্যমে নিজের সম্পদ নিয়ে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে, সেগুলোকে ‘অসত্য’ বলে দাবি করেছেন র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর।
মাঠে নেমেই দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা সাবেক আইজিপির বিপুল সম্পদের সন্ধান পান। প্রথমে বেনজীর, তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা সম্পদ জব্দ করতে আদালতে আবেদন করেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা।
সেদিন আদালত ৮৩টি দলিলের ৩৪৫ বিঘা জমি জব্দ এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকে তাঁদের নামে থাকা ৩৩টি হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেন।
এরপর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আরো সম্পদের হদিস। আদালতে আবার অনুমতি চাওয়া হলে রোববার সেসব সম্পদও অবরুদ্ধ ও জব্দ করতে আদেশ দেওয়া হয়।
বেনজীর আহমেদ পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর গুলশানে একদিনেই চারটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। বছরখানেক আগে ২০২৩ সালের ৫ মার্চ রাজধানীর অন্যতম দামি ও অভিজাত এলাকায় কেনা ফ্ল্যাটগুলোর দাম দেখানো হয় মাত্র দুই কোটি ১৯ লাখ টাকা।
তবে এবার সেই চারটি ফ্ল্যাটসহ তার ১১৯টি দলিল জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। জব্দের তালিকায় আছে সঞ্চয়পত্র, শেয়ারবাজারে তিনটি বিও অ্যাকাউন্ট ও ১৯ প্রতিষ্ঠানের মালিকানা।
এরইমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর আসে ব্যাংকের হিসাব জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ বাস্তবায়নের আগেই বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল অর্থ সরিয়ে নেন বেনজীর আহমেদ। এই টাকার পরিমাণ কয়েক শ’ কোটি হতে পারে।