কলকাতায় খুন হওয়া সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার চোরাচালানে জড়িত ছিলেন- এমন কথা কখনোই বলা হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে হাইওয়ে পুলিশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এমপির এলাকাটি সন্ত্রাস প্রবণ। তাই হত্যার মোটিভ উদঘাটনে তদন্ত চলছে। আমরা কখনো বলিনি যে, চোরাচালান ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে তিনি খুন হয়েছেন।
ওখানে সত্যিকারে কী হয়েছে সেটা আমাদের জানতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, আমরা তদন্ত করছি, তদন্তের পরে আপনাদের সব কিছু জানাবো।
সংসদ সদস্যের মেয়ে সন্দেহভাজনদের নাম বলেছেন। তাদের মধ্যে কারা আছেন তা জানতে চাওয়া হয়। জবাবে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, যখন তদন্ত চলে তখন আমাদের মন্ত্রী, আইজিপি কিংবা তদন্তকারী কর্মকর্তার পক্ষ থেকে তদন্ত না করে কোনো কিছু বলা সম্ভব না। আমরা মনে করি তদন্ত শেষ হলে এগুলো নিয়ে কথা বলবো।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্যকে নির্মমভাবে খুনের ঘটনার রহস্য ডালপালা মেলছে। হুন্ডি ও চোরাচালানের অর্থের ভাগাভাগিতে আনার খুন হয়েছেন- বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশিত হলেও জেলা আওয়ামী লীগের নেতা গ্যাস বাবু গ্রেপ্তারের পর এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক কিনা তা নিয়ে জল্পনা চলছে।
এরি মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, আনার হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শেষ হলে অনেকেই গ্রেপ্তার হতে পারেন।
গত ১২ মে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে কলকাতায় যাওয়ার পরেরদিন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার।
এরপর ২২ মে সকালের দিকে তার খুনের খবর প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ বলছে, কলকাতার উপকণ্ঠে নিউটাউনের অভিজাত আবাসন সঞ্জীবা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে আনারকে খুন করা হয়।
খুনের আলামত মুছে ফেলতে দেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়। এরপর সুটকেস ও পলিথিনে ভরে ফেলে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্যকে হত্যার পর মরদেহ ফেলার কাজে অংশ নেয়া মুম্বাই থেকে ভাড়া করে আনা কসাই জিহাদকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। আরেক অভিযুক্ত নেপালে গ্রেপ্তার সিয়াম হোসেনকেও হেফাজতে নিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
আর ঢাকায় ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হন হত্যাকাণ্ডের মূল সংঘটক চরমপন্থি নেতা আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, শিলাস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী ওরফে সাজি ওরফে তানভীর ভূঁইয়া তিনজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে হেফাজতে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ।