ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন প্রতিষ্ঠার জন্য উজবেকিস্তানকে অনুরোধ করা হয়েছে। তাসখন্দে আয়োজিত এক বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ অনুরোধ করা হয়।
বুধবার (১২ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়।
বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে তৃতীয় দফা ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) তাসখন্দে অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং উজবেকিস্তানের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রথম উপমন্ত্রী বাখরোমজন আলয়েভ নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন।
অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব শাহ আহমেদ শফি এবং উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসেবে এফওসিতে অংশ নেন।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আলোচনা করা হয়ে। উভয় পক্ষই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার জন্য উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সফর বিনিময়ে বিশেষভাবে জোর দিয়েছে।
উভয় পক্ষই টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং কৃষি পণ্যের ক্ষেত্রে আরও ব্যবসায়িক সংযোগ স্থাপন এবং যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। তারা পর্যটন ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের ওপর জোর দেন।
পররাষ্ট্র সচিব উজবেকিস্তানকে ঢাকায় উজবেক কূটনৈতিক মিশন প্রতিষ্ঠা এবং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ স্থাপনের জন্য অনুরোধ করেন। এর মধ্যে দিয়ে দুই দেশের মধ্যে শুধু ব্যবসা ও বিনিয়োগের সম্পৃক্ততা জোরদার নয়, সংস্কৃতি, পর্যটন এবং জনগণের ক্ষেত্রে বাস্তব ফলাফল বয়ে আনবে।
পররাষ্ট্র সচিব সহযোগিতার দিগন্ত বিস্তৃত, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির মতো নতুন ক্ষেত্রগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার ওপর জোর দেন।
উজবেকিস্তানের প্রথম উপমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় নতুন গতি আনতে পররাষ্ট্র সচিবের উত্থাপিত ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে গভীর ও ফলাফলমুখী সহযোগিতা বৃদ্ধিতে তার সরকারের দৃঢ় সংকল্প ও অঙ্গীকারের কথা জানান। তিনি বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক গুরুত্বের ইস্যুতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য প্রশংসা করেন। উভয় পক্ষই মিয়ানমারের পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় চলমান সংকট নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভাগাভাগি করে নিয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব উজবেকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সে সময় তিনি উজবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি চিঠি হস্তান্তর করেন। উজবেকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
এছাড়া বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি এবং ইউনিভার্সিটি অব ওয়ার্ল্ড ইকোনমি অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসি অব উজবেকিস্তানের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
উভয় পক্ষই পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশে পরবর্তী দফা ফরেন অফিস কনসালটেশন আয়োজনে সম্মত হয়েছে।