ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার প্রায় পাঁচ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামে কোথাও একটু মাটিও অবশিষ্ট নেই, যেখানে প্লাবিত হয়নি। বাড়ি, ঘর, মসজিদসহ সবই তলিয়ে গেছে।
এরমধ্যে সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার ৪ শতাধিক গ্রাম তলিয়েছে। আর সুনামগঞ্জের খাসিয়ামারা নদীর বাঁধ ভেঙে জেলা সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার অন্তত ৭০টির মতো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
প্রাণ বাঁচাতে উঁচু জায়গা ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন দুর্গতরা। এসব এলাকার বাসিন্দাদের ঈদ রূপ নিয়েছে বিষাদে। এমন পরিস্থিতিতে অনেক সামর্থবান ব্যক্তি পশু কোরবানি দিতে পারেনি। আবার অনেকে পশু কিনেও কোরবানি দিতে পারেননি। আশ্রয়কেন্দ্রে কেটেছে অনেকের ঈদ।
সিলেটের স্থানীয়রা জানান, গতকাল রাতে টানা বৃষ্টি হওয়ায় এবং ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সোমবার সকালে পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। ফলে তারা আর বাড়িতে থাকতে পারেননি। এরপর তারা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যান।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, ঈদের দিন হওয়ায় নৌকার সঙ্কটও দেখা দেয়। ফলে দুর্গতদের আশ্রয়কেন্দ্রে আনতেও বেগ পেতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেটে কোনো বাড়িতে কোমর সমান পানি উঠেছে। তাদের মধ্যে ঈদের আমেজ নেই। অসুস্থদের চিকিৎসা নিতেও সমস্যা হচ্ছে।
এদিকে, ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র আগামী তিনদিন ভারী বৃষ্টির পূর্ভাবাস দিয়েছে। এতে সিলেট বিভাগে স্বল্প মেয়াদি বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেয়াসহ বন্যা মোকাবেলায় সকল ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, ভারতে বৃষ্টি হলে পানি পাহাড়ি ঢলের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী উপজেলা দিয়ে সিলেটে প্রবেশ করে। যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে, তাতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঢলের তোড়ে সিলেট-সুনামগঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় গ্রামীণ সড়ক ভেঙে গেছে। এতে এলাকাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে।