প্রশ্নপত্র ফাঁসে গ্রেপ্তার সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) পাঁচ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার পিএসসির চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত বহিষ্কার আদেশে বলা হয়েছে, ওই পাঁচজনকে চাকরি আইন অনুসারে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা বিধি অনুসারে খোরপোষ ভাতা পাবেন।
বরখাস্তরা হলেন- উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির এবং পিএসসির কর্মচারী (ডেসপাস রাইডার) খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম।
বিএফআইউ এর ওই কর্মকর্তা জানান, ব্যাংক হিসাব জব্দ সংক্রান্ত চিঠি বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এসব ব্যাংক হিসাব জব্দ থাকবে।
এরই মধ্যে এ সব কর্মকর্তাসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রোববার (৭ জুলাই) রাতে বিসিএসের প্রশ্নফাঁস নিয়ে পিএসসির বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর সৈয়দ আবেদ আলীর পোস্টগুলো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতে থাকে। এ ঘটনায় সোমবার (৮ জুলাই) রাতে পুলিশ বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন আইনে এই মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ১৭ জনকে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক (ডিসপাস) সাজেদুল ইসলাম।
এছাড়া নোমান সিদ্দিকী, ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশীদ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান মো. নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর সাখাওয়াত হোসেন ও সায়েম হোসেন এবং লিটন সরকার আরও একজন গ্রেপ্তার হন।
বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ সাতজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে আবেদ আলীর ছেলেসহ ১০ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আবেদ আলী, পিএসসির (ডেসপাস রাইডার) খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম, মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন, ব্যবসায়ী সাইম হোসেন ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লিটন সরকারকে আদালতে তোলা হয়। এরমধ্যেব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল জবানবন্দি দিতে অস্বীকৃতি জানান।
কারাগারে পাঠানো ১০ আসামি হলেন, আবেদ আলীর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম, পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশিদ, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তাপ্রহরী মো. শাহাদত হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেকনিশিয়ান নিয়ামুল হাসান ও জাহিদুল ইসলাম।
রোববার রাতে এক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে সিআইডি।
সোমবার রাতে সিআইডি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা করে। ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে মামলায় আসামি করা হয়েছে এই মামলায়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য, পিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই এই চক্রের সদস্যরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অর্থ নিতেন।