টানা বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেষ পর্যন্ত ভেঙে গেছে কুমিল্লার গোমতী নদীর বাঁধ। এর ফলে লোকালয়ে হু হু করে পানি ঢুকছে।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১টার দিকে বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকায় প্রায় ৩০ ফুট এলাকাজুড়ে বাঁধে ধস নামে।
রাতে স্থানীয় মসজিদগুলো থেকে সাধারণ মানুষকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে। এ সময় মানুষজনকে ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে দিকবিদিক ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন। ধসে যাওয়া বাঁধের আয়তন ক্রমশ বাড়ছে বলেও জানান তিনি।
সন্ধ্যা থেকেই বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া এলাকায় বাঁধ ধসে যাওয়ার উপক্রম হয়। পরে সেনাবাহিনীর দুটি টিম বাঁধ রক্ষায় এগিয়ে এলেও স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়ে। পরে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান তারা।
এদিকে বাঁধ ধসে যাওয়ার ফলে কুমিল্লার বুড়িচং এবং ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলা শতভাগ প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানি বাড়তে পারে কুমিল্লা নগরীতেও।
বন্যার্তদের উদ্ধারে ছয় জেলায় সেনা মোতায়েনবন্যার্তদের উদ্ধারে ছয় জেলায় সেনা মোতায়েন
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবদুল লতিফ বলেন, বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতীর বাঁধে ধসের ঘটনা ঘটেছে। ফলে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। আমরা গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় মানুষজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে আসছি।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত জেলার ১১টি উপজেলার ৬২টি আশ্রয়কেন্দ্রে চার হাজার ৩০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়াও নতুন করে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় থাকা এলাকাগুলোতে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১১ উপজেলার দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। এরমধ্যে গোমতির বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার আরও কয়েক লাখ লোক বন্যাকবলিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।