কক্সবাজারে টানা ভারী বর্ষণে দুই স্থানে পাহাড় ধসে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তিনজন এবং কক্সবাজারে তিনজন রয়েছে।
শুক্রবার ভোরে উখিয়ার পালংখালি হাকিম পাড়া ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের লাগোয়া দক্ষিণ ডিককুল এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
ক্যাম্পে নিহতরা হলো- উখিয়ার পালংখালি ক্যাম্প ১৪ ই-২ ব্লকের বাসিন্দা আব্দুর রহিম, তার দুই শিশুর সন্তান আব্দুল হাফেজ (১০) ও আব্দুল ওয়াহাদ (৪)। এছাড়া সদর উপজেলার দক্ষিণ ডিককুলের মিজানুর রহমানের স্ত্রী আখি মনি এবং তার দুই শিশু কন্যা মিহা জান্নাত নাঈমা ও লতিফা ইসলাম।
ক্যাম্প মাঝি কবির আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর হতে মুষলধারে শুরু হওয়া বৃষ্টি রাতেও চলে। ভারী বৃষ্টির তোড়ে শুক্রবার ভোরে পাহাড় ধস হলে পালংখালি ক্যাম্প ১৪ ই-২ ব্লকের বাসিন্দা আব্দুর রহিমের ঘরটি ভেঙে পড়ে। এতে ঘরের সবাই মাটিচাপা পড়ে। এতে আব্দুর রহিম ও তার দুই শিশু মারা যায়।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, ভারী বৃষ্টিতে ক্যাম্প-১৪ তে পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে অতিবৃষ্টির কারণে মুভ করা কষ্টকর হচ্ছে।
অপরদিকে ঝিলংজা ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সুলতান জানান, শুক্রবার ভোররাতের দিকে ভারী বৃষ্টির তোড়ে মিজানের বাড়ির দিক থেকে একটি পাহাড় ধসের বিকট শব্দ শুনতে পায় স্থানীয়রা। পরে তারা দেখেন স্ব-পরিবারে মাটিচাপা পড়েছে মিজানের পরিবার। তাৎক্ষণিকভাবে মিজানকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পরে ভোরের দিকে কক্সবাজার দমকল বাহিনীর সহযোগিতায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে স্ত্রী ও দুই শিশু মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তারা জানান, মিজানের বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। পরে মধ্যরাতে উপর থেকে পাহাড় ধসে তার বাড়িতে পড়ে।
এদিকে কক্সবাজার ত্রাণ ও প্রত্যাবাশন কমিশন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন জানান, ভারী বর্ষণে উখিয়া ১৪ নম্বর হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে তিনটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া শহরের পাশে পাহাড় ধরে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবীদ মো. আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয় ৩৭৮ মিলিমিটার। আর বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা হতে শুক্রবার বেলা ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ৪৫৩ মিলিমিটার। চলমান মৌসুমে এটি একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি রয়েছে। আরো কয়েকদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। সঙ্গে পাহাড় ধসের সম্ভাবনাও রয়েছে।