ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্র সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে ছয়টি কমিশন গঠন করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। সংস্কার বিষয়ক কমিশনগুলো আগামী ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করবে। আর চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংস্কারের প্রতিবেদন জমা দেবে এসব কমিশন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি জানান, সংস্কার কমিশনগুলো রিপোর্ট দিলে সেগুলো প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় পর্যালোচনার পর অনলাইনে উন্মুক্ত করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, সংস্কারের বিষয়ে আওয়ামী লীগ ছাড়া সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হবে। যারা গণহত্যা চালিয়েছে, হাজারের ওপর মানুষকে হত্যা করেছে, হাজার হাজার মানুষকে আহত করেছে, যারা বিচারের ভয়ে পালিয়ে আছে তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে না। এটা আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য।
‘মব জাস্টিস’ বা গণপিটুনিতে হত্যার মতো ঘটনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ডে আমরা মর্মাহত। এই ধরনের প্রতিটি ঘটনার বিচার করা হবে। আমরা এটা নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে আসার পর নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
মাহফুজ আলম বলেন, আগামী তিনমাসের মধ্যে কমিশনগুলো সরকারের কাছে সংস্কার প্রস্তাব দেবে। কমিশনগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করবে, কোনো রাজনৈতিক চাপ থাকবে না।
আপাতত ছয়টি কমিশন গঠিত হলেও রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য আরও কয়েকটি কমিশন গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এতোদিন কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে ছিলাম আমরা। কর্তৃত্ববাদী সরকার যেন আর ফিরে না আসে। কীভাবে ঢেলে সাজানো হবে সেসব বিষয়ে আজ আলোচনা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।