প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় আয়োজন শারদীয় দুর্গোৎসব। মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তরা দেবী দুর্গাকে সিঁদুর দেয়ার মাধ্যমে সিঁদুর খেলা করবেন। পরে আরতি, শোভাযাত্রাসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে।
দেবী দুর্গাকে বিদায় দিয়ে এই উৎসবের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরও একটি বছর। আর তাই মণ্ডপে মণ্ডপে এখন বিষাদের ছায়া। ঢাক-কাঁসরের বাদ্যি-বাজনা, আরতি, পূজা অর্চনায় কেবলই দেবী দুর্গার বিদায়ের আয়োজন।
রোববার বিজয়া দশমীতে সারাদেশে স্থানীয় আয়োজন ও সুবিধামতো সময়ে বিজয়ার শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে। বিসর্জনের উদ্দেশ্যে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গন থেকে কেন্দ্রীয় বিজয়া শোভাযাত্রা বের হবে বিকেলে। এছাড়া রাজধানীর পূজামণ্ডপের অধিকাংশ যোগ দেবে এই বিজয়া শোভাযাত্রায়। বিকেলের মধ্যেই সদরঘাটের ওয়াইজঘাটের বুড়িগঙ্গা নদীতে একে একে বিসর্জন দেয়া হবে প্রতিমা। সর্বত্র বিসর্জন শেষে ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করবেন।
হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রতি শরতে কৈলাস ছেড়ে কন্যারূপে মর্ত্যলোকে আসেন দেবীদূর্গা। তার এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মধ্যে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব।
মহালয়ার মধ্য দিয়ে ২ অক্টোবর এবারের দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছিল। ওইদিন থেকেই পূজার আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয়। শাস্ত্রীয়ভাবে দুর্গাপূজা শনিবারই শেষ হলেও প্রতিমা বিসর্জন, সিঁদুর খেলাসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে আজ।
এদিকে, বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি জানিয়েছে, বিসর্জন শোভাযাত্রার সম্ভাব্য রুট হচ্ছে- ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির হতে বের হয়ে পলাশী মোড়-জগন্নাথ হল-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-দোয়েল চত্বর-হাইকোর্ট বটতলা-সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল -পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স-নগর ভবন-গোলাপশাহ মাজার-বঙ্গবন্ধু স্কয়ার-গুলিস্থান-নবাবপুর লেভেল ক্রসিং -নবাবপুর রোড-মানসি হল ক্রসিং -রথখোলার মোড়-রায়সাহেব বাজার মোড় -শাঁখারীবাজার -জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়-সদরঘাট বাটা ক্রসিং-পাটুয়াটুলি মোড় ও সদরঘাট টার্মিনাল মোড় হয়ে ওয়াইজঘাট গিয়ে শেষ হবে।
বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে স্বাভাবিক নিরাপত্তার পাশাপাশি ট্র্যাফিক পুলিশও মোতায়েন থাকবে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, পলাশী মোড় ও বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় তিনটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।
পলাশীর মোড়, রায় সাহেব বাজার ও ওয়াইজঘাটে স্থাপন করা হয়েছে তিনটি ওয়াচ টাওয়ার। ডিএমপি’র পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময় ও রুট অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।