ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্রতিটি ধাপের নির্বাচনে সংঘাত-সহিংসতা ঘটেছে। গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত চতুর্থ ধাপের নির্বাচনও সহিংসতামুক্ত ছিল না। এদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঠাকুরগাঁও, পটুয়াখালী ও সিলেটে নিহত হয়েছেন তিনজন। এ ছাড়া কিছু স্থানে ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই, সংঘর্ষ, গুলি এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে ভোটের দিন সহিংসতায় যথাক্রমে ৬ ও ৭ জন নিহত হয়েছিলেন। আর গতকাল বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সংঘাতে আহত হয়েছেন ৫২ জন। এ পর্যন্ত দেশজুড়ে নির্বাচনী সংঘাতে ৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
ভোট গ্রহণ শেষে গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংবাদ ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, চতুর্থ ধাপে ৮৩৬টি ইউপিতে আনন্দমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। ভোট পড়ার হার ৭০ শতাংশের বেশি হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। তিনি বলেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত থাকার কারণে ১৫টি ভোটকেন্দ্রে ভোট বন্ধ করা হয়। ভোট গ্রহণের সময় প্রার্থীদের সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় ২৯ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় ৬৩ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, নিহত ৩
ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউপিতে পরাজিত এক ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকেরা পুলিশের ওপর হামলা চালান। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালালে হামিদুর রহমান (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে দক্ষিণ আসাননগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউপি নির্বাচনে ভোট পুনর্গণনার দাবিতে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুল খালেক (৪০) সদস্য প্রার্থী মো. জিয়াউর রহমানের (ভ্যানগাড়ি) সমর্থক।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ফুলবাড়ি ইউপি নির্বাচন ঘিরে সহিংসতায় আবদুস সালাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। গতকাল রাতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ৮টার দিকে পরাজিত একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থকেরা বৈটিকর এলাকায় সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে চাইলে অবরোধকারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হন। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকটি গুলি ছোড়ে। এ সময় সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় আবদুস সালামকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।