বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন আজ। ১৯৬৭ সালের এই দিনে (২০ নভেম্বর) তার জন্ম। ১৯৭১ সালে কনিষ্ঠ কারাবন্দিদের একজন। ২০০৮ সাল থেকে তিনি লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। বিগত বছরগুলোয় তার দেশে ফেরার কোনও আলাপ ওঠেনি। তবে এ বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি দলের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা হয়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক হিসাবনিকাশ ও সরকারের অবস্থানও ভূমিকা রাখছে।
নিজের জন্মদিন নিয়ে বিএনপির শীর্ষনেতা তারেক রহমান নিজের পক্ষ থেকেই কোনও ধরনের আয়োজন করার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। দল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুবার প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দলের শীর্ষনেতার জন্মদিন পালনে আনুষ্ঠানিকভাবে কেন কঠোর হতে হলো বিএনপিকে? বিষয়টি নিয়ে একাধিক নেতা মনে করেন, শীর্ষনেতার জন্মদিনকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ‘অর্থ-সংশ্লিষ্ট’ কার্যক্রম চালায়। নেতাকর্মীদের থেকে অর্থ উত্তোলন করা হয়। বিগত সময়ে এ ধরনের অভিযোগ দলের উচ্চ পর্যায়ে উঠেছে।
একটি সূত্র উল্লেখ করে, ‘এই ধরনের অনুষ্ঠানের নামে বাংলাদেশে এক ধরনের রাজনৈতিক কর্মী দলীয় ও তার সমর্থকদের কাছে অর্থ সংগ্রহ করে। এটা এই যদি হয় তাহলে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করবে। সেজন্য তিনি (তারেক রহমান) কঠোর হয়েছেন, বিশেষ করে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করতে পারে এরকম কাজে।’
মঙ্গলবার বিএনপির ৩১ দফা নিয়ে অনুষ্ঠিত একটি কর্মশালায় তারেক রহমান নিজের নামের আগে ‘দেশনায়ক’, ‘রাষ্ট্রনায়ক’ শব্দ ব্যবহার করতেও মানা করেছেন। দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, তারা যেন নামের আগে এই দুটি বিশেষণ ব্যবহার না করেন।
দলের কেউ কেউ মনে করেন, এর পেছনে রাজনৈতিক বার্তা আছে। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়া এবং তার বিদেশযাত্রার বিলম্ব বা অনিশ্চয়তা; এবং সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির চেয়ারপারসনের কাছে আমন্ত্রণপত্র গেছে।
রাজনৈতিক কর্মী ও পর্যবেক্ষকদের কেউ-কেউ এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তারেক রহমানের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার একটি চেষ্টা বিএনপির মধ্যে রয়েছে। এক্ষেত্রে নাগরিক সমাজেও ইতিবাচক প্রভাব আসতে পারে বলে মনে করেন কেউ-কেউ।
এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সার্বিক বিবেচনায় ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছেন এবং ভূমিকা রাখছেন। তিনি বিশ্বাস করেন দেশের কল্যাণে গুণগত পরিবর্তন আনতেই হবে ইতিবাচক অবস্থানের কোনও বিকল্প নেই’।
২০১৮ সালে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার পরেই স্থায়ী কমিটির বৈঠককে সুনির্দিষ্ট এজেন্ডাভিত্তিক করেছিলেন তারেক রহমান। বিভিন্ন সিদ্ধান্ত এককভাবে নিলেও আগে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনার করার বিষয়টি সমানভাবে পালন করতেন তিনি।