বগুড়ায় দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ইট-পাটকেল ছুড়ে অফিসের কাঁচ ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হন নাই। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ সুপার, সদর থানায় জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের জলেশ্বরীতলায় অবস্থিত দৈনিকটির অফিসে এই ঘটনা ঘটে।
বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, রাত সাড়ে ১০টার পর আটটি মোটরসাইকেলে মুখোশধারী হামলাকারীরা শহরের কালীবাড়ি মোড়ের দিক থেকে রেজাউল বাকী সড়ক হয়ে প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে আসে। এরপর ব্যাগে করে আনা পাথর ছুঁড়ে কার্যালয়ের কাঁচের দেয়াল প্রায় পুরোটা ভাঙচুর করে। এ ছাড়া কার্যালয়ের ডিজিটাল সাইনবোর্ডও ভাঙচুর করা হয়। এরপর মোটরসাইকেল যোগে হামলাকারীরা জেলখানা মোড় হয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
তিনি জানান, হামলা আশঙ্কায় প্রথম আলোর কর্মীরা আগেই অফিস তালাবদ্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছিলেন। এ ঘটনায় কেউ আহত হননি।
এদিকে ওই হামলার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সোশ্যালে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, একদল দুর্বৃত্ত রাস্তা থেকে অফিসে ইট-পাটকেল ছুড়েছে।
প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আনোয়ার পারভেজ বলেন, আমরা রোববার থেকেই হামলার আশঙ্কায় ছিলাম। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার ও ওসিকে অবগত করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু পুলিশের সহযোগিতা না পাওয়ায় এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সচরাচর রাত ১১টা পর্যন্ত অফিসে থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু হামলার আশঙ্কায় পৌনে ৯টার দিকেই বাসায় চলে যাই। পরে জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফোন করে জানান আমাদের অফিসে হামলা চালানো হয়েছে।
অফিসের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার রাত ১০টা ৩৩ মিনিটে আটটি মোটরসাইকেলে আসা ২২-২৪ জন মুখোশধারী ব্যক্তি বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা কালিবাড়ি মোড় এলাকা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়কে এসে থামেন।
মোটরসাইকেল থেকে নেমেই তারা ব্যাগে করে আনা পাথরের বড় বড় টুকরো হাতে নিয়ে প্রথম আলোর কার্যালয় লক্ষ্য করে ছুঁড়তে থাকেন। বাইরে থেকে পাথর ছুঁড়ে তারা প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনের ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট ১০ এমএম মোটা কাঁচের দেয়াল ভেঙে চুরমার করেন। এ ছাড়া কার্যালয়ের ডিজিটাল সাইনবোর্ডও ভাঙচুর করেন। এরপর মোটরসাইকেল চালিয়ে হামলাকারীরা জেলখানা মোড় হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। হামলা-ভাঙচুরে সময় নিয়েছেন তারা দুই মিনিটের কম। হামলাকারীদের শনাক্তে পুলিশ রাতেই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন।