১১ বছর পর ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪। চলবে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এক লাখ ৪০ হাজার ট্যাব নিয়ে এই কাজে অংশ নেবে ৯৫ হাজার গণনাকারী। যারা দেশের এক কোটি ২২ লাখ ছোট-বড় প্রতিষ্ঠানের সার্বিক আর্থিক তথ্য ৭০টি প্রশ্নের মাধ্যমে জরিপ করবেন।
এ কাজে পুরো দেশকে দুই হাজার ৬০০ জোনে ভাগ করেছে পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭৯ কোটি টাকা।
সোমবার আগারগাঁও পরিসংখ্যান ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে শুমারির বিস্তারিত তুলে ধরে বিবিএস। এবারের স্লোগান, ‘অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য দিন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশ নিন’।
জরিপে ইউনিটের প্রকার ও আকার এবং শিল্পের ধরণ, মালিকের বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, জনবল, উৎপাদিত দ্রব্য, বাজারজাতকরণ, মূলধন, বিনিয়োগ, স্থায়ী সম্পদ, পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা, ই-কমার্স নিয়ে ৭০টি প্রশ্নের উত্তর জানবেন ৯৫ হাজার গণনাকারী।
সারাদেশকে ১৩টি শুমারি বিভাগে ভাগ করে এর মধ্যে ১৩০টি শুমারি জেলা, ৫২০টি শুমারি উপজেলা, দুই হাজার ৬০০ জোন, ১৯ হাজার সুপারভাইজার এলাকা এবং ৯৫ হাজার গণনাকারী এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আগারগাঁওয়ে, বিবিএস অডিটরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, এবার অর্থনৈতিক শুমারি হবে সম্পূর্ণ পেপারলেস। সুতরাং শুমারিতে কারও হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ থাকবে না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে জনশুমারি, কৃষি শুমারি ও অর্থনৈতিক শুমারি করে।
দেশের সর্বপ্রথম অর্থনৈতিক শুমারি ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়, এরপর দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০০১ এবং ২০০৩ সালে পর্যায়ক্রমে হয়। তৃতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থনৈতিক শুমারির মূল লক্ষ্য হলো- সময়ের বিবর্তনে একটি দেশের অর্থনীতিতে যে কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটে, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা। প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত প্রস্তুত করা; শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত সব প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মৌলিক তথ্য সরবরাহ করা; অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত জনবলের হিসাব নিরূপণের পাশাপাশি তাদের ধরন সম্পর্কে ধারণা লাভ করা; শিল্প বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান মৌলিক সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা; বিনিয়োগকৃত মূলধন ও জনবল কাঠামো অনুযায়ী শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিবিন্যাসকরণ এবং তাদের সংখ্যা নির্ধারণ এবং শিল্পোন্নয়নের জন্য দেশের নীতিনির্ধারক, পরিকল্পনাবিদ, গবেষকসহ বিভিন্ন অংশীজনদের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করা।
তথ্য সংগ্রহ করতে ফ্যাক্টরিতে গণনাকারীদের প্রবেশ করাটা অবশ্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বিবিএস। সে ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছে সরকারি সংস্থাটি।