বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আংশিক বাতিল করেছে হাইকোর্ট। এর মাধ্যমে বাতিল হলো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান, ফিরতে পারে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। রায়ের পর এ নিয়ে পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, এই (অন্তর্বর্তীকালীন) সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রিনেমড হতে পারে। যেমন জেলা ও দায়রা জজ একই ব্যক্তি যখন সিভিল মামলা করেন তখন তাকে বলা হয় জেলা জজ, আবার ওই একই ব্যক্তি যখন ক্রিমিনাল মামলা পরিচালনা করেন তখন তিনি দায়রা জজ। তেমনি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যক্তিরা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার সিস্টেমে চলে যাবে উনারাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হবেন। এটায় সাংবিধানিক সাংঘর্ষিকতার কোনো জায়গা নেই।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আপিল বিভাগে (ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার) যে রিভিউ পেন্ডিং আছে তা বাইপাস করেই হাইকোর্টের এই রায়ের প্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কেন আছে? কারণ, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনীতে দুটি পার্ট। এক হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বৈধ নাকি অবৈধ। এই পার্টে চারজন বলছেন অবৈধ, তিনজন বলেছেন, বৈধ। আবার দ্বিতীয় পার্টে সব বিচারপতি বললেন, পরবর্তী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই যে পরবর্তী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হবে এটা বলার আগেই পঞ্চদশ সংশোধনী চলে এসেছে। তাহলে ধরে নেয়া হবে, ওই জাজমেন্ট কার্যকর আছে। তাহলে কমপক্ষে আগামী দুটি নির্বাচন তো আপিল বিভাগের অ্যাটেনশন লাগে না। অর্থাৎ আপিল বিভাগে থাকা ত্রয়োদশ সংশোধনীর রিভিউ রায়ের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয় না।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন কীভাবে ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, সংবিধানের বেসিক স্ট্রাকচার কীভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে, বিচার বিভাগ কীভাবে অ্যাফেক্টেড হয়েছে সে কথাগুলো রায়ে বলা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। রেফারেন্ডাম বিষয় তথা জনগণের ক্ষমতা সংকুচিত করার বিধান অবৈধ ঘোষণার মাধ্যমে গণভোট ফিরিয়ে আনার বিষয়ে রায়ে বলা হয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু বিষয় পরবর্তী পার্লামেন্ট দেখবেন বলে রায়ে বলা হয়েছে।
তৎকালীন দুইজন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বিচার বিভাগ ধ্বংসের জন্য দায়ী উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে রায়ের ১৭ মাস পর খায়রুল হক তা প্রকাশের বিষয় তুলে ধরেন।