আজিমপুর করবস্থানে বাবা-মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এর আগে তার তিনটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। অংশ নেন তার শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে না নেয়ায় সম্মানহানি হলো খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় আজিমপুর কবরস্থানে। সেখানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে শেষবারের মতো শায়িত করা হয় তাকে।
এদিন বাদ জুমা ধানমন্ডি ঈদগাহ মাঠ ও ঈদগাহ মাঠ মসজিদে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের দুইটি জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। অংশ নেন আরেফিন সিদ্দিকের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মরদেহ নেয়া হয়নি তার দীর্ঘ দিনের কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ভিসির প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয় গ্রীন রোডে তার নিজ বাসভবন সংলগ্ন আল আকসা মসজিদে সকাল ১১টায়। জানাজায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানসহ সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
অবশ্য এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা পরিবারের সিদ্ধান্তেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বলে জানান উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জানাজা শেষে আরেফিন সিদ্দিকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় আজিমপুর কবরস্থানে। সেখানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের নিউরোসায়েন্স ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আরেফিন সিদ্দিক।
মস্তিষ্কে স্ট্রোক ও রক্তক্ষরণজনিত কারণে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি।
২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন।
২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষ করে পুনরায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ২০২০ সালের জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ২০২০ সালের ১৫ জুলাই তাকে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি পদাধিকারবলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক, ১৯৯৪ ও ১৯৯৬ সালে সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৪ ও ২০০৫ সালে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া স্পেনের রাজার পক্ষ থেকে ২০১১ থেকে ২০১২ সালে নারী উন্নয়ন, নারী শিক্ষা ও সামগ্রিক সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমে নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে এই শিক্ষাবিদ ‘অর্ডার অব সিভিল মেরিট’-এ ভূষিত হন।












The Custom Facebook Feed plugin