যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে “নির্ধারিত সামরিক অভিযান” পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। এই হামলা শনিবার ইয়েমেনে অন্তত ২৩ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে এবং আরও ২০ জন আহত হয়েছে বলে হুথি-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল-এ এক পোস্টে জানিয়েছেন, হুথিদের বিরুদ্ধে “চূড়ান্ত প্রাণঘাতী শক্তি” প্রয়োগ করা হবে এবং এটি অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ না যুক্তরাষ্ট্র তার লক্ষ্যে পৌঁছায়। তিনি অভিযোগ করেছেন, হুথিরা আমেরিকান ও অন্যান্য জাহাজ, বিমান এবং ড্রোনের ওপর একের পর এক “সন্ত্রাস, সহিংসতা ও জলদস্যুতার” ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে।
তিনি বলেছেন, মার্কিন বাহিনী হুথিদের ঘাঁটি, নেতৃত্ব এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর হামলা চালাচ্ছে “আমেরিকান নৌবাণিজ্য, বিমান ও নৌবাহিনীর সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক নৌ চলাচল নিশ্চিত করতে”।
ট্রাম্প আরও বলেছেন, “কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিশ্বব্যাপী জাহাজ চলাচল বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।” একইসঙ্গে তিনি হুথিদের প্রধান মদদদাতা ইরানকে সতর্ক করে বলেছেন, “যদি তারা আমেরিকানদের বা প্রেসিডেন্টকে হুমকি দেয়, তাহলে আমরা তাদের পুরোপুরি দায়ী করব এবং সেটা ভালোভাবে হবে না!”
ইয়েমেনের রাজধানী সানা এবং উত্তরের সাদা প্রদেশে মার্কিন হামলায় ১৩ জন নিহত ও ৯ জন আহত হয়েছে। সাদায় ১০ জন নিহত এবং ১৩ জন আহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। হুথি বাহিনী দাবি করেছে, হামলায় দাহিয়ান শহরের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস হয়েছে এবং পুরো শহর বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
হুথি নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আনিস আলাসবাহি বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের এই আগ্রাসন ইয়েমেনের জনগণের মনোবল ভাঙতে পারবে না; বরং এটি গাজা ও প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতি আমাদের সমর্থন আরও দৃঢ় করবে।”
ট্রাম্পের প্রশাসন কয়েক সপ্তাহ আগেই হুথিদের ওপর হামলার পরিকল্পনা তৈরি করেছিল এবং শনিবার এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এটি দীর্ঘমেয়াদি সামরিক অভিযানের শুরু, যা কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
ট্রাম্প বলেন, “বছরের পর বছর ধরে হুথিরা আমাদের নৌবহর ও মিত্রদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। আমেরিকা এর শেষ দেখতে চায়।”
তিনি হুথিদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “তোমাদের সময় শেষ! আজ থেকেই তোমাদের আক্রমণ বন্ধ করতে হবে, না হলে নরক নেমে আসবে!”