জলাধার উদ্ধার অভিযানে গিয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। সেই অভিযানে আবাসন কোম্পানির মালপত্র লুটপাট করেছেন স্থানীয় ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের লোকজন। লুটপাটের সংবাদ সংগ্রহে ভিডিওচিত্র ধারণ করায় এ সময় প্রথম আলোর সাংবাদিককে লাঞ্ছিতও করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে খিলক্ষেতের কুড়িল উড়াল সড়ক এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটির অভিযানে গিয়ে এমন লুটপাটের দৃশ্য দেখা গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, মেয়রের উপস্থিতিতেই ঢাকা উত্তর সিটির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইসাহাক মিয়ার কর্মী ও সমর্থকেরা ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের নির্মাণাধীন সাইট অফিস ভাঙচুর করেন। অফিসটির জানালার লোহার গ্রিলগুলো খুলে লুট করে নিয়ে যান নেতা-কর্মীরা।
পাশেই ছিল নির্মাণ কর্মকর্তাদের বসার, শ্রমিকদের থাকার ও মালপাত্র রাখার অস্থায়ী টিনের ছাউনির ঘর। ওই ঘরের ভেতর থাকা সিমেন্টের বস্তা, চেয়ার, টেবিল, লোহার রড ও লোহার অন্য কাঠামো লুটপাট করতে শুরু করেন কাউন্সিলরের কর্মীরা। এ সময় করপোরেশনের পোশাক পরিহিত পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
এক পর্যায়ে রীতিমতো রিকশা ডেকে এনে তাতে ওই ঘর থেকে লুট করা সিমেন্টের বস্তাগুলো ওঠানো শুরু করেন তাঁরা। এ কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ কিছু কর্মী। এ দৃশ্য ভিডিও করতে গেলে ওই কর্মীরা দূরে সরে গিয়ে রিকশাচালক ও এক শ্রমিককে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন।
ভিডিও ধারণ করতে দেখে কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) হাসমত আলী পাশ থেকে সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। সিমেন্টের বস্তা লুটকারীদের একজন ফিরে এসে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ভিডিও ডিলিট করতে বলেন। এই লোক সাংবাদিকের শার্টের কলার চেপে ধরে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
অভিযানে গিয়ে কোনো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলে, উচ্ছেদ করা মালপত্র সাধারণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা পরিষ্কার করে সরিয়ে নেন। পরবর্তীকালে এগুলো নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার নিয়ম আছে।
ডেভেলপার কোম্পানির মালপত্র সরানোর বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক মাসুম আহমেদের কাছে। এ বিষয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আমরা কোনো সিমেন্টের বস্তা, জানালার গ্রিল, চেয়ার-টেবিল, লোহার রড-কাঠামো কিছুতেই হাত দিইনি। শুধু মেয়র যে বড় সাইনবোর্ড ভাঙার নির্দেশনা দিয়েছেন, সেটা ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছি।