বাংলাদেশের আরো কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য বাংলাদেশের ভেতরে ও বাইরে জোরালো তৎপরতা (লবিং) চলছে। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ-প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সভাপতি গ্রেগরি মিকস গত সোমবার রাতে নিউ ইয়র্কের কুইন্সে এক আলোচনায় এ তথ্য জানান।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ককে চমৎকার উল্লেখ করে বক্তৃতায় এই কংগ্রেসম্যান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা দিতে চায় না। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছি না।
একটি সংস্থার কিছু ব্যক্তিবিশেষের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, পুরো সংস্থাকে নয়। আমরা সেখানে (বাংলাদেশে) পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি।’
যুক্তরাষ্ট্র গত ডিসেম্বরে র্যাব এবং সাত সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অনুরোধ জানান যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের ১০ জন সদস্য। তাঁরা ২০২০ সালের অক্টোবরে ট্রাম্প প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ও পররাষ্ট্র দপ্তর গত ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বাংলাদেশ আগে থেকে বিষয়টি জানতে পারেনি।
বাংলাদেশ সরকার প্রকৃত চিত্র বিদেশে তুলে ধরতে বিদেশে মিশনগুলোকে সম্প্রতি নির্দেশনা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতেও ব্রিফিং পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া মানবাধিকার ইস্যুতে বিদেশিদের উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে নিরসন এবং এ বিষয়ে নিবিড় সমন্বয়ের জন্য ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার সেল খোলা হচ্ছে।
কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিকসের বক্তব্য নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস। গ্রেগরি মিকসকে প্রভাবশালী কংগ্রেসম্যান অভিহিত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিকসের নির্বাচনী এলাকা নিউ ইয়র্কের ফিফথ কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি আমেরিকান বসবাস করেন। ভোটারদের প্রতি সহানুভূতি, দৃঢ়তা ও জোট গঠনে দক্ষতার জন্য কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিকস পরিচিত। তিনি একজন খ্যাতনামা আইনজীবীও।
তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে নিউ ইয়র্কে ডেমোক্রেটিকদলীয় মার্কিন প্রতিনিধিসভার সদস্য এবং ২০২১ সাল থেকে প্রতিনিধিসভার পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
নিষেধাজ্ঞা আরোপ প্রসঙ্গে কংগ্রেসম্যান মিকস বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নই। আর আমরা এখনো বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের সঙ্গে কাজ করছি।’
কংগ্রেসম্যান মিকস বলেন, ‘বাংলাদেশের ভেতরের ও বাইরের একটি মহল আরো কর্মকর্তার পাশাপাশি রাজনীতিবিদদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের জোরালো লবিং করছে। কিন্তু আমরা তাদের কথামতো এটি করব না। সব বিষয় যাচাই-বাছাই করেই আমরা সঠিক উদ্যোগ নেব।’
গ্রেগরি মিকস বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি ও অন্যান্য বিষয় দেখতে তিনি এ বছর ঢাকা সফর করবেন।