শুক্রবার , ২৫ জুলাই ২০২৫ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. London Mirror Specials
  2. অন্যান্য
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. খুলনা
  7. খেলা
  8. চট্রগ্রাম
  9. জেলার খবর
  10. ঢাকা
  11. তথ্য-প্রযুক্তি
  12. প্রবাসের কথা
  13. বরিশাল
  14. বাংলাদেশ
  15. বিনোদন

ফ্রান্সের নতুন সিদ্ধান্ত, রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে ফিলিস্তিনকে

প্রতিবেদক
Newsdesk
জুলাই ২৫, ২০২৫ ১২:৫২ অপরাহ্ণ

একটি পোস্টেই ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ বদলে দিলেন অনেক কিছু, আবার কিছুই বদলাল না।

সপ্তাহের শেষভাগে গভীর রাতে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ ঘোষণা দিলেন, সেপ্টেম্বরে ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে। এটি হবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ও জি-৭ ভুক্ত প্রথম দেশ হিসেবে এমন স্বীকৃতি। সবাইকে চমকে দিলেন তিনি।

অনেকে আগেই আঁচ করেছিল যে ফ্রান্স এমন পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে ইরান-ইসরায়েলের সাম্প্রতিক যুদ্ধের কারণে সৌদি আরব ও ইউরোপীয় মিত্রদের নিয়ে আয়োজিত ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিষয়ক সম্মেলন স্থগিত হয়ে যায়, যেখানে এই স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ছিল। তাই এই ঘোষণা যে হঠাৎ এলো তা নয়, কিন্তু ঠিক এইভাবে আসবে সেটা কেউ ভাবেনি।

মাক্রোঁর ঘোষণার মধ্য দিয়ে বোঝা গেল তিনি মনে করছেন এখনই সঠিক সময়।

এই ঘোষণার ঠিক পরদিন শুক্রবার ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির নেতারা গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের তীব্রতা নিয়ে কথা বলবেন। মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি গাজাবাসী ক্ষুধার তাড়নায় খাবারের খোঁজে গিয়ে মারা গেছেন, আরও অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন অনাহারে।

গাজা সিটির আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে ক্ষুধায় কাতর দুই বছরের শিশু ইয়াজান দাঁড়িয়ে ছিল নিজের বিধ্বস্ত ঘরের ভেতর, পেছন ফিরে। এমন ছবি দেখে অনেকেরই মনে পড়ছে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে অন্ধকার সময়গুলো।

এই পরিস্থিতিতে মাক্রোঁর স্বীকৃতি সাহসী সিদ্ধান্ত। নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও স্পেন এর আগেই স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে ফ্রান্স এই প্রথম বড় শক্তিধর দেশ হিসেবে এমন পদক্ষেপ নিল।

ফরাসি প্রেসিডেন্টের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বললেন, “আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানের কথা হয়েছে, আমি নিশ্চিত যে শুধু আমরাই নই, সেপ্টেম্বরে আরও দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।”

এখন দৃষ্টি যাবে যুক্তরাজ্য ও সম্ভবত জার্মানির দিকে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যেটি ইসরায়েলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র, ট্রাম্প না থাকলেও, এমন কোনো স্বীকৃতি দেবে বলে মনে হয় না।

এতকিছুর পরেও যাঁরা গাজার মাটিতে আছেন, তাঁদের জীবনে এই স্বীকৃতিতে কোনো বদল আসবে না।

হামাস একে বলেছে “একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।” ইসরায়েলি নেতারা বলেছে, এটি সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, যিনি দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বিরোধী, বললেন যে এটি “সন্ত্রাসবাদকে পুরস্কৃত করছে।” ইসরায়েলের ডানপন্থী নেতারা আরও একধাপ এগিয়ে বলছেন, এই স্বীকৃতি এখন পশ্চিম তীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত করার যৌক্তিকতা তৈরি করে দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রও এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। মার্কো রুবিও, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র সচিব, বললেন, “আমরা এই সিদ্ধান্তকে শক্তভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।” তিনি আরও লিখেছেন, “এই দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত হামাসের প্রচারণায় সাহায্য করবে এবং শান্তিপ্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এটি ৭ অক্টোবরের নিহতদের প্রতি এক ধরনের চপেটাঘাত।”

তবে গাজায় খাদ্য অবরোধের মধ্যে যারা প্রতিদিন না খেয়ে মরছে, তাদের জন্য এই স্বীকৃতি হয়তো অনেক দেরিতে আসবে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা UNRWA’র প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বললেন, গাজার মানুষ যেন এখন “হাঁটতে হাঁটতে মরে যাচ্ছে।”

২১ লাখ মানুষের কেউই এখন খাদ্য নিরাপত্তায় নেই। মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ৯ লাখ শিশু না খেয়ে আছে। এর মধ্যে ৭০ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে।

মাক্রোঁর একক ঘোষণায় অনেকেই দেখছেন একরকম হতাশা।

তিনি সাধারণত আন্তর্জাতিক মঞ্চে জোট তৈরি করতে পছন্দ করেন। অনেককে নিয়ে একসাথে চলতে ভালোবাসেন। এক মাস আগে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ আয়োজনে রিয়াদে একটি সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছিল ১৭ থেকে ২০ জুন। কিন্তু ১৩ জুন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

সর্বশেষ - আইন-আদালত