অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম জানিয়েছেন, তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে কম্বোডিয়া এবং থাইল্যান্ড। ফলে দুই দেশের সীমান্তে এখন থেকেই এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। শান্তির পথে হাঁটার জন্য দুই দেশকে ধন্যবাদও জানান তিনি।
সোমবার মালয়শিয়ার রাজধানী কুয়ালামপুরে দুই দেশের শীর্ষ নেতার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা জানান।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় ৩০ মিনিট দূরে পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সরকারি বাসভবনে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত এবং থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত নেতা ফুমথাম ওয়েচায়াচাই অংশ নেন।
এছাড়াও আলোচনায় অংশ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তারা। উভয়ই দেশই যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানিয়ে চলমান সংঘাত ও উত্তেজনা কমাতে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার প্রতি আহবান জানিয়ে আসছিলো।
প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর সংবাংদ সম্মেলনে এসে মালয়েশিয়ার নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছে, স্থানীয় সময় সোমবার মধ্যরাত থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। তিনি আরও বলেন, এটি উত্তেজনা হ্রাস এবং শান্তি ও নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ। তিনি জানান, উভয় দেশ নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছে।
আনোয়ার বলেন, থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে তাৎক্ষণিক এবং নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করবে। এটি উত্তেজনা হ্রাস এবং শান্তি ও নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরদিন সকালে দুই দেশের সামরিক কমান্ডাররা মঙ্গলবার একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন।
এরপর ৪ আগস্ট আসিয়ানের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রতিরক্ষা অ্যাটাশেদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে কয়েক মাসের উত্তেজনার পর ২৪ জুলাই থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩৩ জন নিহত এবং হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজ নিজ বাণিজ্য আলোচনার পূর্বশর্ত হিসেবে উভয় দেশকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে বলার পর শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুটি দেশের মধ্যে বিরোধ এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে, যখন কম্বোডিয়ায় ফরাসি শাসন অবসানের পর দেশটির সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। তবে শুধু সীমান্ত বিরোধই নয়, দুই দেশের প্রভাবশালী দুই রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যে দীর্ঘ দিনের শত্রুতাকেও এই সংঘাতের নেপথ্যের কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, খুব ভালো একটি বৈঠক হয়েছে। অবিলম্বে লড়াই বন্ধের আশা করছি। তিনি উল্লেখ করেন, সংঘাতের উভয় পক্ষের তিন লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। কম্বোডিয়ার নেতা আনোয়ার, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চীনা সরকারকে মধ্যস্থতায় জড়িত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
থাই প্রতিপক্ষ ফুমথাম ওয়েচায়াচাইকে আলোচনায় গঠনমূলক কথা বলার জন্যও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।




















