বুধবার , ১ অক্টোবর ২০২৫ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. London Mirror Specials
  2. অন্যান্য
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. খুলনা
  7. খেলা
  8. চট্রগ্রাম
  9. জেলার খবর
  10. ঢাকা
  11. তথ্য-প্রযুক্তি
  12. প্রবাসের কথা
  13. বরিশাল
  14. বাংলাদেশ
  15. বিনোদন

“শত কোটি টাকা আত্মসাৎকারীর হাতে মালয়েশিয়া বিএনপি নেতৃত্ব!”

প্রতিবেদক
Newsdesk
অক্টোবর ১, ২০২৫ ৬:২৭ অপরাহ্ণ

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন: এমএলএম প্রতারণার নতুন নায়ক জাহাঙ্গীর আলম: মালয়েশিয়া বিএনপির বিতর্কিত কমিটির পেছনের কাহিনী

এমএলএম প্রতারণার নতুন অধ্যায় বাংলাদেশে বহুল আলোচিত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা এমএলএম প্রতারণা আবারও নতুন রূপে আবির্ভূত হয়েছে। এই প্রতারণার মূল নায়ক হিসেবে সামনে এসেছে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে এম জে আলম। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং বিএনপির নেতা পরিচয়ে সক্রিয় রয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে তিনি বিদেশে পালিয়ে গেছেন। তার সঙ্গী হিসেবে রয়েছেন এমএলএম জগতের আরেক বিতর্কিত নাম গাজী জাকির হোসেন। তারা মিলে চালু করেছেন En-Loving এবং Elinks Global Marketing Ltd।

ঢাকার অফিসে তাদের হয়ে কাজ করছে ডেসটিনির সাবেক বড় নেতারা। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, ৮–১০ লাখ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। শুধু একজন ভুক্তভোগী একাই ৮২ লাখ টাকা হারিয়েছেন।

ভুয়া ব্যবসা, মিথ্যা স্বপ্ন নতুন কোম্পানির মূল পুঁজি হিসেবে দেখানো হচ্ছে চর্ম ও যৌনরোগের ভুয়া ওষুধ। এসব ওষুধের নাম করে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে অল্প টাকায় বিনিয়োগ করিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে চক্রটি। নূরী আলম, এক সময়ের E-Links প্লাটিনাম এক্সিকিউটিভ, দাবি করেছেন এমএলএম থেকেই তিনি কোটি টাকা আয় করেছেন। বর্তমানে তিনি ফ্ল্যাট ও গাড়ির মালিক।

আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

এম জে আলম বাংলাদেশে থাকাকালে কখনো বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না। বরং তার পরিবার ছিল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি শত শত কোটি টাকা নিয়ে মালয়েশিয়ায় পালান। এরপর মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার বাদলুর রহমান বাদলকে মোটা অংকের অর্থ দিয়ে বিএনপির পদ বাগিয়ে নেন।

বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়া জহুর প্রদেশের বিএনপির সাবেক সভাপতি বর্তমান জহুর প্রদেশ বিএনপির উপদেষ্টা পদে আছেন। এখানকার নতুন কমিটি তার নিয়ন্ত্রণে।

বিতর্কিত কমিটির নিয়ন্ত্রণ প্রবাসী মহলে অভিযোগ উঠেছে, অর্থের বিনিময়ে বিএনপির পদ ভাগ করা হচ্ছে।

জহুর প্রদেশ বিএনপির সভাপতি জয়নাল গত ১৫ বছরে বিএনপির কোন প্রোগ্রামে সক্রিয় তেমটা ছিলেন না, মাঝেমধ্যে প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতেন তথ্য নেয়ার জন্য সেই তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাচার করতেন। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মালয়েশিয়া থেকে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ করা হয় সে সকল ব্যক্তিদেরকে শনাক্ত করাই ছিল তার কাজ। অতীতে দেখা যায় জহুর প্রদেশের বিএনপির সভাপতি জয়নাল আওয়ামী লীগের মন্ত্রী দীপু মনির প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন।

জহুর প্রদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক জিল্লাহ শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করার পর বিএনপির পদ পান। তামানডায়া শাখা সভাপতি রুবেল ১৫ বছর বিএনপির সাথে কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।

সাংগঠনিক সম্পাদক মিজান চৌধুরী ১৫ বছর বিএনপির সাথে কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না তারপরও বাদলুর রহমানের সুপারিশে পদ পান। জহুর প্রদেশের বিএনপির কমিটি অনুমোদনের পরের দিনই জহুর প্রদেশ বিএনপি নেতাদের আওয়ামী লীগের সভাপতির সাথে দেখা করতে দেখা যায়, যেখানে তারা বিজয় চিহ্ন প্রদর্শন করেন। এই ছবি বিএনপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ভাইরাল হয়।

জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের সময় এম জে আলমকে আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে দুবাইতে দেখা যায়। সরকার পতনের পর হঠাৎ করে তার ফেসবুকে তারেক রহমানকে প্রশংসাসূচক পোস্ট করতে দেখা যায়। অথচ ৫ ই আগস্ট এর আগে কখনোই বিএনপিকে নিয়ে তিনি কোন পোস্ট করতেন না

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪ সালে তিনি Loven Bioscience Beverage Ltd নামে আরেকটি নতুন লাইসেন্স পান জাহাঙ্গীর আলম। জানা গেছে, অতীতে মালয়েশিয়াতেও তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে পুলিশের কাছে একাধিক রিপোর্ট আছে।

প্রবাসীদের ক্ষোভ মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৫ লক্ষ বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছেন, যারা আগামী নির্বাচনে পোস্টাল ভোটের মাধ্যমে বড় ভূমিকা রাখতে পারবেন। কিন্তু এম জে আলমের নেতৃত্বে বিএনপির কমিটি নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ। বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কাজী সালাহউদ্দিন বলেন, আমাদের কর্মীরা সচেতন নয়। ভোটের গুরুত্ব বোঝাতে হাইকমান্ডকে এগিয়ে আসতে হবে। সহ-সভাপতি তালহা মাহমুদ বলেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনয়ন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম উপেক্ষিত হচ্ছে। কিন্তু প্রবাসীরা এসব বক্তব্যকে “হাস্যকর ও হতাশাজনক” মন্তব্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

সবকিছু মিলিয়ে প্রবাসীদের মধ্যে জোরালো প্রশ্ন উঠছে বিএনপি কি আসলেই দলকে শক্তিশালী করছে? নাকি বিতর্কিত এমএলএম প্রতারক ও মানব পাচারের আসামিদের হাতে দলকে তুলে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে দুর্বল করা হচ্ছে?

সর্বশেষ - আইন-আদালত