গাজায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর করা হয়েছে। তবে, এই যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের অভিযোগে উত্তেজনা এখনও রয়েছে। খবর টাইমস অব ইসরাইলের।
রোববার (১৯ অক্টোবর) সকালে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ এলাকায় ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসীদের হামলায় দুই ইসরায়েলি সৈন্য মেজর ইয়ানিভ কুলা এবং স্টাফ সার্জেন্ট ইতাই ইয়াভেতজ নিহত এবং তিনজন আহত হন। আইডিএফ এই হামলার জন্য হামাসকে দায়ি করে এবং প্রতিশোধমূলকভাবে গাজায় ২০টি লক্ষ্যবস্তুতে তীব্র বিমান হামলা চালায়।
হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানায়, এই হামলায় ৪৫ জন নিহত হয়েছেন, যদিও এই সংখ্যা যাচাই করা যায়নি এবং এতে বেসামরিক ও যোদ্ধাদের আলাদা করা হয়নি।
টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার রাতে আইডিএফ ঘোষণা করে, রাজনৈতিক নির্দেশনা অনুযায়ী এবং ব্যাপক হামলার পর তারা হামাসের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জবাবে পুনরায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করছে।
আইডিএফ জোর দিয়ে বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলবে এবং যেকোনো লঙ্ঘনের কঠোর জবাব দেবে। তবে, ইসরাইলি একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ইসরাইলি সৈন্যরা যে ‘ইয়েলো লাইন’-এ প্রত্যাহার করেছে, সেখান থেকে মিশর সীমান্ত পর্যন্ত এলাকা উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে। এই এলাকায় ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গে হামাস সন্ত্রাসীরা লুকিয়ে থেকে ইসরাইলি বাহিনীকে উত্যক্ত করছে।
যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়া রোধে জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে। মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ইসরায়েলের স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার রন ডার্মারের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওয়াশিংটন ইসরাইলকে আনুপাতিকভাবে জবাব দেওয়ার এবং সংযম দেখানোর অনুরোধ করেছে। উইটকফ এবং কুশনার সোমবার (২০ অক্টোবর) ইসরাইল সফরে যাচ্ছেন এবং মঙ্গলবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
হামলার পর ইসরাইল প্রথমে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করার কথা বিবেচনা করেছিলো। তবে, মার্কিন চাপের কারণে সোমবার সকালে সীমান্ত ক্রসিং পুনরায় খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে হামাস ২০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্ত করলেও ২৮ জন মৃত জিম্মির মধ্যে ১৬ জনের দেহ এখনও ফেরত দেয়নি। তবে, রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, হামাস এ পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ ফিরিয়ে দিয়েছে। হামাসের দাবি, ধ্বংসস্তূপের কারণে এই দেহ উদ্ধারে অসুবিধা হচ্ছে। তবে ইসরাইলের অভিযোগ, এটি ইচ্ছাকৃত বিলম্ব।
এই ঘটনা গাজার যুদ্ধবিরতির ভঙ্গুরতা এবং মধ্যপ্রাচ্যের জটিল পরিস্থিতিকে সামনে এনেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ২০ দফা পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্যায়ে হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজার শাসনভার একটি আন্তর্জাতিক কমিটির হাতে হস্তান্তরের বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে।


















