দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার উদ্যোগ শুরু করেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে অন্তত ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করেছেন দলটির নেতারা।
আগামী শুক্রবারের মধ্যে আরও বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এরই অংশ হিসেবে গত রোববার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়।
রাতে অলির মহাখালির ডিওএইচএসের বাসায় সাড়ে ৩ ঘণ্টার ওই অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ।
বৈঠকের কথা এলডিপি মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ যুগান্তরের কাছে স্বীকার করলেও এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
তবে সূত্র জানায়, বৈঠকে দীর্ঘদিনের ভুল-বুঝাবুঝির অবসান হয়েছে। আগামী দিনে একসঙ্গে পথ চলার বিষয়ে দুই দলের নেতারাই অঙ্গীকার করেছেন। বিএনপি নেতারা আন্দোলন ও বৃহত্তর ঐক্যের বিষয়ে অলি আহমদের পরামর্শসহ সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনিও আগামী দিনে একসঙ্গে কাজ করবেন বলে বিএনপি নেতাদের জানিয়েছেন।
এছাড়াও এলডিপির আরেক অংশকে ২০ দলে স্বীকৃতি না দেওয়ার দাবি জানান অলি আহমদ। জবাবে বিএনপি নেতারা তাকে কথা দেন, বিষয়টি সমাধান করবেন তারা।
বৈঠক সূত্র জানায়, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেন অলি আহমদ।
তবে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিংবা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বিএনপি নেতাদের জানান, এটা বাস্তবায়ন দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। এর চেয়ে এখনই জাতীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলন করা উচিত। দীর্ঘ সময় ধরে চলা বৈঠকে অতীতের বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে স্মৃতিচারণ করেন দুই দলের নেতারাই।
প্রসঙ্গত, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপির ওপর নাখোশ ছিল ২০ দলের শরিকরা। সে সময় এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ’ নামের বিকল্প জোটও গঠন করা হয়। পরে এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে অলির দূরত্বের সৃষ্টি হয়। পরে এলডিপির একটি অংশ বেরিয়ে গেলেও দুই অংশই ২০ দলীয় জোটে থেকে যায়। সে সময় এলডিপির ভাঙন নিয়ে বিএনপির ওপর আরো ক্ষুব্ধ হন অলি আহমদ।