দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে শূন্য থালা হাতে ‘ঝংকার সমাবেশ’ করেছে পিপলস অ্যাকটিভিটি কোয়ালিশন (প্যাক)। স্টিলের শূন্য থালায় চামচের আঘাতে শব্দ তৈরি করে এই কর্মসূচির আয়োজকেরা বলেছেন, এই আওয়াজের মাধ্যমে তাঁরা সরকারকে শোনাতে চান যে দেশ ‘দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে’।
আজ সোমবার বিকেলে শাহবাগে এই কর্মসূচি হয়। কর্মসূচি থেকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের কড়া সমালোচনা করা হয়৷ ‘খাবার দে, নয়তো গদি ছাড়’ বলে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন প্যাকের সদস্যরা।
বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সচিব থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের ব্যক্তিদের ‘মিথ্যুক’ বলে আখ্যা দেন প্যাকের প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শাসকেরা কখনোই জনগণের কথা ভাবেনি। জনগণকে নিয়ে সরকারের কোনো চিন্তা নেই। দেশের গরিব মানুষের পক্ষে আজ মাছ-মাংস খাওয়া সম্ভব নয়; এমনকি তাঁরা যে সবজি খেতেন, দাম বাড়ায় তা–ও এখন খেতে পারছেন না। এই হলো আজকে দেশের অবস্থা। পানি, বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাস—সবকিছুর দাম গত এক বছরে বেড়েছে। এর মূল কারণ দুটি—এক. তেলের দাম বাড়ানো এবং দুই. পরিবহনে চাঁদাবাজি।
সাকিব আলী অভিযোগ করে বলেন,‘আওয়ামী লীগ সরকার নিজের লোকদের বিদ্যুতের কারাখানা দিয়েছে। এর মাধ্যমে তাঁরা হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কিন্তু এতে জনগণের কোনো লাভ হয়নি। বাংলাদেশে দুর্নীতি করে রাতারাতি বড় লোক হওয়া যায়। এই বাংলাদেশ আমরা দেখতে চাই না। শেখ হাসিনার সরকারের সময় ঘনিয়ে আসছে। সারা দুনিয়ায় তাদের পথ বন্ধ হয়ে আসছে। শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করব, জনগণের কাছে মাথা নত করুন। বলুন যে আমরা ভুল করেছি।’
প্যাকের কর্মসূচিবিষয়ক মুখপাত্র জাকী সুমন বলেন, এই ঝংকার ক্ষুধার ঝংকার, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদের ঝংকার। খাদ্যপণ্যের দাম যেভাবে লাগামহীন বেড়ে চলেছে, তাতে শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রা চালানোই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্রমবর্ধমান হতাশা থেকে তরুণদের কেউ কেউ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে না পারলে বর্তমান সরকারকে গদি ছাড়তে হবে। এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে দ্রুত ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
এই কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে প্যাকের সংগঠক মেহেদী হাসান, জাফরুল নাদিম প্রমুখ বক্তব্য দেন। প্যাকের ২০-২৫ জন সদস্য এতে অংশ নেন।