ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ‘নাপা সিরাপ সেবন করে’ একই পরিবারের দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সারাদেশের পাইকারি ও খুচরা ফার্মেসি পরিদর্শন করে ওই ওষুধ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। পরীক্ষার প্রতিবেদন ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (১৩ মার্চ) ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইউসুফ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে- বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসের প্যারাসিটামল ১২০ মিলি গ্রাম ও ৫ মিলি গ্রাম সিরাপের (ব্যাচ নং ৩২১১৩১২১, উৎপাদন তারিখ ১২/২০২১, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ১১/২০২৩) ওষুধ সেবন করে একই পরিবারের দুই শিশু মারা গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে সারাদেশের বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাকে স্ব-স্ব নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় পাইকারি ও খুচরা ফার্মেসি পরিদর্শন করে ওই ব্যাচের নমুনা পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামে ইটভাটা শ্রমিক সুজন খানের দুই শিশু সন্তান ইয়াছিন খান এবং মোরসালিন খান জ্বরে আক্রান্ত হয়। এতে গত বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাতে বাড়ির পাশের বাজারের ‘মা ফার্মেসি’ থেকে বেক্সিমকোর তৈরি নাপা সিরাপ নিয়ে শিশুদের সেবন করান। এরপর ওই দুই শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের রাতেই আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে হাসপাতালের চিকিৎসক শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এ অবস্থায় বাড়ি ফেরার পথে ইয়াছিন ও বাড়িতে ফেরার পর মোরসালিন মারা যায়।
মারা যাওয়া দুই শিশুর চাচা ফোরকান ও উজ্জল মিয়া জানান, নাপা সিরাপ খাওয়ানোর পরেই তারা মারা গেছে। একই ঘরে দুই সহোদরের মৃত্যুর ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর শুক্রবার রাতে জেলায় নাপা সিরাপ বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি। তা শনিবার থেকে কার্যকর হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি তদন্ত কমিটিও করা হয়েছে।