All Postবাংলাদেশ

উজানে ভারী বৃষ্টির আভাসে আগাম বন্যার শঙ্কা

উজানে ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ায় দেশের হাওর অঞ্চলে আগাম বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে নেমে আসা পানির ঢল ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীগুলো দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এই সময়ের মধ্যে নদীর পানি বিপৎসীমা টপকে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার হাওরগুলোতে আসতে পারে। সেখানকার বোরো ধান এখনো আধা পাকা অবস্থায় থাকায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে এমনটা বলা হয়েছে।

এক সপ্তাহ ধরে উজানে বৃষ্টি বেশি থাকলেও নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। শুধু দুর্বল বাঁধ চুইয়ে ও ভেঙে হাওরে পানি ঢুকে পড়েছিল। কিন্তু এবার পানির ঢলে হাওর এলাকার সাড়ে ৪ লাখ হেক্টর জমির ফসল ঝুঁকিতে পড়তে পারে। কারণ, এখনো হাওরের মাত্র ১ শতাংশ ধান পেকেছে। মাত্র ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে।

দেশের হাওর এলাকার সবচেয়ে বড় জেলা সুনামগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ পর্যন্ত সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সুনামগঞ্জের দুই লাখ ২২ হাজার হেক্টর বোরো জমির মধ্যে ৭০ হাজার হেক্টর পাকবে। ফলে এখন আধা পাকা ফসল কাটার মতো অবস্থায় নেই। আর একবার পানি ঢুকলে সেখান থেকে ধান কাটা কঠিন হয়ে যাবে।

তবে ধান পাকার আগে বড় ঢল আসবে না বলে মনে করছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম। তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ধান পাকা শুরু হলে তা কাটার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও শ্রমিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বড় ধরনের ক্ষতির আগে ধান কেটে ফেলা যাবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে দেশের ভেতরেও আগামী এক সপ্তাহ ধরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে বলা হয়েছে। ফলে আগামী এক সপ্তাহ ধরে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলোর তীরবর্তী এলাকায় বন্যা সৃষ্টি হতে পারে। তবে এই বন্যা একসঙ্গে সব জেলায় হবে না। আর তা দুই-তিন দিনের বেশি স্থায়ী হবে না।

সরকারের বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী, হাওর এলাকার নদ-নদীর মধ্যে সুরমা, কুশিয়ারা, কংস, যাদুকাটা, লুভাছড়া, সারিগোয়াইন, ধলাগাং, পিয়াইন, ঝালুখালি, সোমেশ্বরী, ডুগাই, ধনু ও বাউলাই নদীর পানির কোনো কোনো স্থানে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে যেতে পারে। এসব নদ-নদীর পাশে মোট ৯৫টি হাওর ও ১০টি বিল রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূইয়া বলেন, বাংলাদেশের উজানে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেশের ভেতরেও বৃষ্টি হতে পারে। ফলে এই দুই বৃষ্টিপাত মিলে হঠাৎ বন্যা আরও বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এ সর্ম্পকিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button