চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় আজ শুক্রবার সকালে এক ব্যক্তির বসতঘর ভেঙে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। নির্বাচনে কথামতো ভোট না দেওয়ায় রামদা, কুড়াল ও শাবল দিয়ে ঘর ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী নারায়ণ নাথ। তবে পুলিশ বলছে, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে।
নারায়ণ নাথের বাড়ি কালিপুর ইউনিয়নের জঙ্গল গুনাগরী এলাকায়। ওই এলাকার নাথপাড়ার ভুক্তভোগী নারী-পুরুষ বিকেলে উপজেলা সদরে গিয়ে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে মানববন্ধন করেছেন। নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
নারায়ণ নাথ মোটরসাইকেল মেরামতের কাজ করেন। তাঁর বড় ভাই সুবল নাথ রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। তাঁরা পাশাপাশি বসবাস করেন। গত বুধবার অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নাথপাড়ার সবাই নৌকা প্রতীকের পক্ষে ছিলেন বলে জানা যায়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. শাহদাত আলম ৪১৭ ভোটে একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নোমানকে পরাজিত করেন। তৃতীয় হন বিএনপির নেতা ও বাঁশখালীতে পুড়িয়ে ১১ জনকে হত্যা মামলার আসামি আমিনুর রহমান চৌধুরী।
নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীদের লোকজন তাঁদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ করেন নারায়ণ নাথ। তিনি বলেন, ১৪ থেকে ১৫ জন যুবক হাতে রামদা, শাবল, কুড়াল নিয়ে সকাল ১০টার দিকে তাঁদের ঘরের সামনে এসে দাঁড়ান। এ সময় বৃষ্টি পড়ছিল। তখন তাঁরা বাইরে থেকে বলছিলেন, কেউ ঘর থেকে বের হলে মেরে ফেলবেন। এরপর ঘর ভাঙা শুরু করেন। দা ও কুড়াল দিয়ে টিন কেটে ফেলা হয়। আর অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে নির্বাচনে কেন ‘নৌকায় ভোট দিয়েছি’, তা জানতে চান তাঁরা। পরে এসে পুরো পাড়া জ্বালিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিয়ে চলে যান হামলাকারীরা।
সন্ত্রাসীদের বেশ কয়েকজনকে চেনেন বলেও জানান নারায়ণ নাথ। তাঁরা পরাজিত দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর অনুসারী বলে জানান তিনি। তাঁদের মধ্যে মাসুদ, আবু ছালেহ, তালেব নামের তিনজন ছিলেন।
ঘর ভাঙার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নারায়ণ নাথ লুকিয়ে অন্য একটি ঘর থেকে এই ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিওর শেষ দিকে তাঁর দিকে একজনকে তেড়ে যেতে দেখা যায়। পরে ভিডিওটি বন্ধ হয়ে যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়, কুড়াল ও রামদা হাতে টিনের ঘরটির টিন কেটে ফেলছেন পাঁচ যুবক। আধঘণ্টার তাণ্ডব চালিয়ে চলে যান তাঁরা। ঘরটি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়।