হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হওয়া ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। রাইসির সঙ্গে নিহত হওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যান্যদেরও মরদেহ শনাক্ত হওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষার আর প্রয়োজন হচ্ছে না।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা ইরনাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ হাসান নামি। বলেছেন, সব মৃতদেহ শনাক্ত করার পর আইনি ওষুধ প্রশাসন সংস্থায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
নামি আরো বলেন, পুড়ে গেলেও সব মরদেহই শনাক্ত করা গেছে। তাদের মধ্যে, তাবরিজের জুমার নামাজের নেতা আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আল-ই-হাশেমের মরদেহ ভালো অবস্থায় রয়েছে।
জুমার নামাজের এই ইমান দুর্ঘটনার পরও একঘণ্টা জীবিত ছিলেন এবং এমনকি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তার সঙ্গে টেলিফোনে কথাও বলেছিলেন।
রোববার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। সেখান থেকে তাবরিজে ফেরার পথে জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।
রাইসির বহনকারী হেলিকপ্টার এতোটাই দুর্গম জায়গায় বিধ্বস্ত হয় যে, অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দলগুলো রাতভর ঘন কুয়াশার মধ্যে পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখেও ঘটনাস্থলের সন্ধান পেতে হিমশিম খান। বিধ্বস্তের পর হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
উদ্ধারকর্মীরা বিধ্বস্ত এলাকায় জীবিত কারো সন্ধান না পাওয়ায় সোমবার প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে ইরান। আরো মৃত্যু হয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাব্দুল্লাহিয়ানসহ মোট ৯ জনের।
আকস্মিক এক ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা ইব্রাহিম রাইসির ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বহরে থাকা তিনটি হেলিকপ্টারের মধ্যে দুটি নিরাপদে ফিরে এলেও রাইসির বহনকারী কপ্টার আগুনে ভস্ম হয়ে যাওয়ার প্রকৃত কারণ নিয়ে এখন রহস্যের জাল বিস্তার হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় চলছে ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ আগ্রাসন। গাজার প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইরান থেকে সরাসরি সমর্থন পাচ্ছে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত হিজবুল্লাহও পাচ্ছে ইরানের সমর্থন। এরি মধ্যে ইসরাইলে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায় রাইসির সরকার।
সেই হামলার পরই ইরানকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ইরানে হামলা চালানোর দাবিও করা হয়। তখন বলা হয়েছিল, আরও প্রতিশোধ নেয়া হবে। তাই হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে ইরানের চিরশত্রু ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল থাকতে পারে, এমন সন্দেহ ছড়াচ্ছে।