সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ঋণের বিষয়ে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা করবে সরকার

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আইএমএফের কাছে কোনও অর্থ সহায়তা চায়নি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এমন মন্তব্যের তিন দিন পর গত রবিবার (২৪ জুলাই) আইএমএফকে সরকারের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে ঋণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার কথা বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা এবং গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘ঋণ পাওয়ার বিষয় অনেক পরে। আগে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হবে। আলোচনার জন্য সরকার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সে ব্যাপারে আইএমএফকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, এখন খুব অল্প দিনের মধ্যে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসবে। হয়তো কয়েকদিন আগে যারা ঘুরে গেলেন, তারাই আসবে। তাদের সঙ্গে শর্তসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। আলোচনা ফলপ্রসূ হলে ঋণের জন্য ফরমাল চিঠি দিতে হবে।’ তিনি উল্লেখ করেন, এই সময়ে চিঠি পাঠানোটা যৌক্তিক ও সময়োপযোগী হয়েছে।

অবশ্য চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে আইএমএফের কাছ থেকে বাংলাদেশের ঋণ চাওয়ার বিষয় নিয়ে বেশকিছু দিন ধরেই আলোচনা চলছে। গত সপ্তাহে সংস্থাটির একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দফতরের সঙ্গে আলোচনা করলে সেই আলোচনা আরও জোর পায়।

তবে গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আইএমএফের কাছে কোনও অর্থ সহায়তা চায়নি। আইএমএফও বাংলাদেশের কাছে এ ধরনের কোনও প্রস্তাব করেনি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের আইএমএফের কোনও সহযোগিতার প্রয়োজন নেই।’

এদিকে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে আইএমএফের কাছে বাংলাদেশের ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা চাওয়ার খবর আসে।

জানা গেছে, আইএমএফকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্য, মূলধনি যন্ত্রপাতি এবং শিল্পের কাঁচামালেরও দাম বেড়েছে অনেক। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে পরিবহনসহ অন্যান্য খরচও বেড়েছে ব্যাপক হারে। আমদানিতে নাটকীয় উত্থান হয় দেশে। ২০২১-২২ অর্থবছরের (জুলাই-মে) ১১ মাসে আমদানি বাড়ে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৯ শতাংশ। যদিও একই সময়ে রফতানি প্রবৃদ্ধি হয় ৩৪ শতাংশ। আর এ অবস্থায় বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দেয় দেশে। এ বছরের মে মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ২ হাজার ৮২৩ কোটি ডলারে।

 

চিঠিতে বলা হয়, গত ১৩ বছরে দেশে টেকসই সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থাই ছিল। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ভালো প্রবৃদ্ধির হারও অর্জিত হয়েছে ২০০৯-২০১৯ সময়ে। ১০ বছরে দারিদ্র্যের হার কমেছে। বেড়েছে গড় আয়ু; সাক্ষরতার হার, মাথাপিছু খাদ্য উৎপাদন ও ক্যালরি গ্রহণ। কিন্তু কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ সাল শুরুর আগে থেকেই বিশ্ব অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর প্রভাব মোকাবিলায় ঠিক সময়ে প্রণোদনা প্যাকেজ প্রণয়ন করে সেগুলো সফলভাবে বাস্তবায়িত করেছে বাংলাদেশ। কোভিডে বাংলাদেশের মানুষের কম আক্রান্ত হওয়া, মৃত্যুর হার কম থাকা এবং ভ্যাকসিন দেওয়ার উচ্চ হারের কারণে ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকেই অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। চিঠিতে আরও বলা হয়, প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর কারণে রফতানি খাত প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছে এবং কৃষি, উৎপাদনশীল খাত ও সেবা খাত কার্যকরভাবেই ফিরে এসেছে। তবে এখন সময় একটু খারাপ (ক্রিটিক্যাল টাইম) বলে জরুরিভিত্তিতে লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রাখা ও বাজেট–সহায়তা বাবদ বাংলাদেশের অর্থের দরকার।

চিঠিতে আরও হয়, বিশ্ববাজারে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও নিত্যপণ্যের দাম। ব্যাহত হয়েছে সরবরাহ ব্যবস্থাও। কোভিডের ক্ষতি থেকে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার পেতে নতুন বিপদ হিসেবে আসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল, গ্যাস, সার ও ভোজ্যতেলের দাম এখনও অস্থির। ফলে কেবল ৯টি পণ্যেই অর্থাৎ পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), কয়লা, চাল, গম, ভুট্টা, সার, পাম তেল ও সয়াবিন তেল আমদানিতে বাড়তি গুনতে হয়েছে ৭৬০ কোটি ডলার। প্রতি ডলার ৯৪ দশমিক ৭০ টাকা দরে হিসাব করলে বাংলাদেশি মুদ্রায় তা দাঁড়ায় ৭১ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। এ হিসাব ২০২১ সালের মে মাসের তুলনায় বর্তমান সময়ের।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, প্রধান শ্রমবাজারগুলোতে কোভিডের প্রভাব কাটিয়ে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার দেরিতে হওয়ায় চলতি অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ।

জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশকে বিশ্বের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ দেশে পরিণত করেছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ ১০০ বছরের ডেলটা পরিকল্পনা এবং ৫ বছরের মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা করেছে। এ জন্য জিডিপির ২ থেকে ৩ শতাংশ অর্থ লাগবে।

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!