সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

দশ মাসেও কার্যকর হয়নি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত

বছর পার হতে চললেও ছাত্রদলের এক ডজন নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারেনি বিএনপি। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি নিয়ে বহিষ্কৃত ছাত্রনেতারা অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের প্রতি। তারা বলছেন, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হলেও বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিবেচনাধীন বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন দলের দায়িত্বশীলরা।

বহিষ্কৃত ছাত্রনেতাদের দাবি, বহিষ্কারের কারণে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ কোনো অঙ্গসংগঠনে তারা এখনো পদ পাননি। এই পরিস্থিতির দ্রুত অবসান চান। আগের মতো দলীয় কর্মসূচিতে থাকতে চান রাজপথে। এজন্য তীর্থের কাকের মতো দলের হাইকমান্ডের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তারা।

জানা যায়, ২০১৯ সালে ছাত্রদলের ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির একপর্যায়ে (২২ জুন) বহিষ্কৃত হন ছাত্রদলের ১২ নেতা। এরপর গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।

২০১৯ সালের ৩ জুন রাজীব-আকরামের নেতৃত্বাধীন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয় বিএনপি। একইসঙ্গে কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনটি যোগ্যতা নির্ধারণী শর্তও ঠিক করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল, ২০০০ সাল থেকে পরবর্তী যে কোনো বছরে এসএসসি পাস শিক্ষার্থীরাই কাউন্সিলে প্রার্থী হতে পারবেন। ফলে নতুন কমিটিতে তখন যারা পদপ্রত্যাশী ছিলেন তাদের বেশিরভাগই বয়সের সীমারেখায় বাদ পড়েন। তাই বয়সসীমা প্রত্যাহার করে অতীতের মতো ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে ছাত্রদলের একটি অংশ বিদ্রোহ করে। এ নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। ভাঙচুর করা হয় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও।

এমন পরিস্থিতিতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সমঝোতায় দলের সিনিয়র নেতারা কয়েক দফা বৈঠক করেও ব্যর্থ হন। দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। একপর্যায়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ১২ জনকে বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আজমল হোসেন পাইলট, ইখতিয়ার রহমান কবির, জয়দেব জয়, মামুন বিল্লাহ, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, যুগ্ম-সম্পাদক বায়েজিদ আরেফিন, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন তুষার, সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আজম সৈকত, আব্দুল মালেক, সাবেক সদস্য আজীম পাটোয়ারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বাশার সিদ্দিকী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের তখনকার সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন।

এরপর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে নানাভাবে চেষ্টা করেন তারা। আর বিদ্রোহ করবেন না, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন বলে হাইকমান্ডের কাছে লিখিত প্রতিশ্রুতিও দেন বহিষ্কৃতরা। এরপরও অজানা কারণে ঝুলে থাকে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার। এরপরও অদৃশ্য কারণে সেই সিদ্ধান্ত এখনো আলোর মুখ দেখেনি।

বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা আজমল হোসেন পাইলট জাগো নিউজকে বলেন, আমরা তো টানা তিন বছর ধরে বহিষ্কার হয়ে আছি। তবুও আমরা থেমে নেই। দল ঘোষিত সব কর্মসূচিতে আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। দল থেকে বহিষ্কার থাকা মানে সব কর্মকাণ্ড থেকেই তো বিরত থাকা। কোথাও বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ হয় না। কোনো ধরনের পদ-পদবির আশা করা যায় না। সাংগঠনিক পরিচয়বিহীন রাজনীতি করার অনেক জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।

‘দলের সবচেয়ে খারাপ সময়ে আমরা সংগঠনের জন্য কাজ করেছি। ১৩/১৪/১৫ সালের আন্দোলনে ঘরে বসে থাকিনি। তখন জীবন বাজি রেখেছিলাম। ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) টানা হাজিরা থেকে সাজা হওয়ার আগে বা পরে সব কর্মসূচিতে সক্রিয় থেকেছি। গ্রেফতার-জেল-রিমান্ড সবই আমরা ভোগ করেছি। অতীতের মতো আমরা আবার রাজপথ মিছিলে স্লোগানে মুখরিত করতে চাই।’

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীসময়ে এ নিয়ে আর কোনো আলোচনা হয়নি। যেহেতু বিষয়টি স্থায়ী কমিটি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে গেছে, এখন সর্বোচ্চ স্থান থেকে এর সমাধান হবে। তবে বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার জন্য বলা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, গত সেপ্টেম্বরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ছাত্রদলের সাবেক ১২ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সেই সিদ্ধান্ত এখনো বাস্তবায়িত হয়নি, যা দুঃখজনক। অবিলম্বে তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমি বলতে পারছি না। যারা সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে কাজ করেন তারা বলতে পারবেন।

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনও দাবি করেন, বিষয়টি তিনি জানেন না।

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!