আগামী শনিবার ঢাকার মহাসমাবেশ নয়াপল্টনের বাইরে কোথাও করা সম্ভব নয় বলে পুলিশকে জানিয়েছে বিএনপি।
পুলিশের পক্ষ থেকে ‘বিকল্প দুটি স্থান চেয়ে’ চিঠি পাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে বিএনপি। পাশাপাশি পল্টন থানাকে চিঠি দিয়েও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছ থেকে বিএনপির পাশাপাশি আওয়ামী লীগকেও চিঠি পৌঁছে দেন পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া। চিঠিতে সমাবেশের বিকল্প দুটি স্থান চাওয়ার পাশাপাশি সাতটি বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হয়।
সমাবেশে লোকসমাগমের সংখ্যা, সময়, বিস্তৃতি, কোন কোন স্থানে মাইক লাগানো হবে, অন্য দলের কেউ উপস্থিত থাকবেন কি না এসব বিষয় জানতে চাওয়া হয়।
বিএনটিপর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বৃহস্পতিবার পল্টন থানার ওসিকে চিঠি দিয়ে জানান ২৮ অক্টোবরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনেই আয়োজনের সকল প্রস্ততি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। অন্য কোনো ভেন্যুতে যাওয়া সম্ভব হবে না।
চিঠিতে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ সম্পর্কিত যেসব তথ্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো- সমাবেশ বেলা ২টায় শুরু হয়ে মাগরিবের আজানের আগে শেষ হবে, সমাবেশে এক লাখ থেকে সোয়া লাখ লোক হতে পারে, সমাবেশটি পশ্চিমে বিজয়নগর মোড় ও পূর্বে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে, সমাবেশে পশ্চিমে বিজয়নগর মোড় এবং পূর্বে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত কিছুদূর অন্তর অন্তর মাইক লাগানো হবে।
আরও জানানো হয়, ২৮ অক্টোবর সমাবেশে বিএনপির নেতারা ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন না, সমাবেশের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দলের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন যার সংখ্যা ৫০০ জন।
সরকার পতনের দাবি আদায়ের ‘এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনের’ অংশ হিসেবে শনিবারের ওই সমাবেশ গত ১৮ অক্টোবর আহ্বান করা হয়।
সেদিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শনিবারের মহাসমাবেশ থেকে তাদের মহাযাত্রা শুরু হবে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি থেমে থাকব না।
এদিকে শনিবার বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়নের সমাবেশ ডেকেছে আওয়ামী লীগ। গত ২০ অক্টোবর সমাবেশের স্থান উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বরাবর চিঠি দেন দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ।
পরের দিন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আরেকটি চিঠিতে নয়াপল্টনে জমায়েত হওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে আরেকটি চিঠি দেন ডিএমপি কমিশনারকে। তবে ডিএমপির পক্ষ থেকে কোনো দলকেই সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
সমাবেশের দুই দিন আগে বৃহস্পতিবার জানা যায়, বুধবার দুই দলকেই সড়কের বদলে ময়দানে জমায়েত হওয়ার প্রস্তাব দিয়ে চিঠি দেয় মহানগর পুলিশ।
বুধবার ডিএমপির পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়, বিএনপিকে যেখানে অনুমতি দেওয়া হবে সেখানেই সমাবেশ করতে হবে।
দুই দলের সমাবেশ ঘিরে রাজনৈতিকসহ সব মহলে তুমুল আলোচনা চলছে। আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপি কোনো বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর হবে তারা। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, সরকার তাদের আন্দোলন দমন করতে চায়।
এদিকে শনিবার যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত দল জামায়েতে ইসলামী শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে চাইলেও তাদের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।