সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আরো উদ্যোগ নিতে হবে: আইএমএফ

বিশ্বজুড়ে প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুতগতিতে মূল্যস্ফীতি কমছে। বৈশ্বিক সরবরাহব্যবস্থায় অনুকূল পরিবর্তন আসায় ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি কমে আসছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ মুদ্রানীতি দেশটির চলমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। তবে এটি স্থিতিশীল করতে আরো উদ্যোগ প্রয়োজন।

যত দ্রুত মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা যাবে, বাংলাদেশের জন্য তা ততই ভালো হবে।

গত বুধবার আইএমএফের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের পরিচালক কৃষ্ণ শ্রীনিবাসন টোকিওতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘তারা (বাংলাদেশ) মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রানীতি কঠোর করার উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে মূল্যস্ফীতি কমছে। তবে মূল্যস্ফীতি টেকসইভাবে কমাতে ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রায় দ্রুত নেমে আসা নিশ্চিত করতে আরো উদ্যোগ প্রয়োজন।

রিজিওনাল ইকোনমিক আউটলুক আপডেট ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ থেকে সাংবাদিকরা ভার্চুয়ালি অংশ নেন। আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গত ১৭ জানুয়ারি সর্বশেষ মুদ্রানীতি ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

 

নতুন নীতিতে মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা আছে। এর মধ্যে পলিসি হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা ও বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ১১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা।

 

মুদ্রার বিনিময় হারের অস্থিরতা রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ‘ক্রলিং পেগ’ নীতি গ্রহণ করেছে। চলতি অর্থবছর শেষে দেশে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

বাংলাদেশের সর্বশেষ মুদ্রানীতি প্রসঙ্গে শ্রীনিবাসন বলেন, ‘একের পর এক অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে অনেক দেশের মতো বাংলাদেশকেও করোনা মহামারি থেকে শুরু করে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ এবং পরবর্তী সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে।’

 

তিনি আরো বলেন, ‘সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ আইএমএফের ঋণ চেয়েছিল। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার শর্ত আছে।

একটি হচ্ছে অবশ্যই মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে হবে। অন্যটি হলো দরিদ্র ও আর্থিকভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের রক্ষা করার সময় আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। প্রশাসনিক সংস্কারও এসব শর্তের মধ্যে আছে।’

সার আমদানি ও স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের বকেয়া পরিশোধের জন্য সরকার ব্যাংকগুলোকে যে বিশেষ বন্ড দিয়েছে সে সম্পর্কে এই আইএমএফ কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনাদের বিকল্প কী আছে তা দেখতে হবে। আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজস্ব সংগ্রহ জোরদার রাখতে ও খরচ কমানোসহ অন্যান্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিশ্চিত করতে সরকার কাজ শুরু করছে।’

বাংলাদেশের আইএমএফ ঋণ কর্মসূচি সঠিক পথে আছে কি না জানতে চাইলে শ্রীনিবাসন বলেন, ‘বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে, হ্যাঁ। দুই মাস আগে বাংলাদেশের ঋণ কর্মসূচি নিয়ে আমাদের পর্যালোচনা হয়েছিল এবং ঋণের শর্তগুলো পূরণের ক্ষেত্রে তা সন্তোষজনক ছিল।’ এশিয়ার সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ভালো খবর হচ্ছে আমরা এশিয়ার ২০২৩-২৪ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস সংশোধন করেছি। বেশির ভাগই ইতিবাচক। আমাদের হিসাবে এশিয়ার গড় মূল্যস্ফীতি ২০২২ সালের ৩.৮ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে ২.৬ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে এখনো ঝুঁকি রয়ে গেছে। যেমন—আর্থিক পরিস্থিতি এখনো অস্থির।’

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পূর্বাভাস বৃদ্ধি করেছে আইএমএফ। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে তারা প্রবৃদ্ধির যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের হালনাগাদ তথ্যে সেটা শূন্য দশমিক ২ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়েছে সংস্থাটি।

আইএমএফের পূর্বাভাস, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩.১ শতাংশ; ২০২৫ সালের জন্যও তারা একই পূর্বাভাস দিয়েছে। এর আগে অক্টোবর মাসে তাদের পূর্বাভাস ছিল ২০২৪ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ২.৯ শতাংশে নামতে পারে, যা ঐতিহাসিক গড় হারের চেয়ে কম।

উন্নত ও উদীয়মান দেশগুলোর মধ্যে ২০২৪ অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধির হার অর্জন করবে ভারত। আইএমএফের পূর্বাভাস, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৫ শতাংশ। পরের অর্থবছর, অর্থাৎ ২০২৪-২৫ সালেও ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৫ শতাংশ।

ভারতের প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিলেও চীনের প্রবৃদ্ধির হার কমবে বলে আইএমএফের পূর্বাভাস। ২০২৪ সালের জন্য তারা চীনের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে ৪.৬ শতাংশ, ২০২৫ সালে যা আরো কমে ৪.১ শতাংশে নামতে পারে। আইএমএফের আনুমানিক হিসাব, ২০২৩ সালে চীনের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.২ শতাংশ, অর্থাৎ টানা দুই বছর চীনের প্রবৃদ্ধি হ্রাসের পূর্বাভাস দিল আইএমএফ। এবারের হালনাগাদে বাংলাদেশ বিষয়ক তথ্য প্রকাশ না করা হলেও অক্টোবর মাসের মূল প্রতিবেদনে আইএমএফ বলেছিল, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ হবে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ শতাংশ।

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!