রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

রোগীর স্বজন পিটিয়ে ‘পলাতক’ পাঁচলাইশ থানার ওসি-এসআই

পুলিশ হেফাজতে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ও এসআই আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর অসুস্থতা দেখিয়ে ছুটিতে যান দুই কর্মকর্তা। এরপর থেকে আর থানায় আসেননি তারা।

আইনজীবীরা বলেছেন, থানায় মামলা দায়েরের সঙ্গে সঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে হয়। অথবা আসামিকে স্বেচ্ছায় আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হয়। আসামি যদি সরকারি কর্মকর্তা হন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করতে হয়। তবে ওসি নাজিম এবং এসআই আজিজকে গ্রেপ্তার করেনি মামলার তদন্ত সংস্থা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা কেউ আদালতে আত্মসমর্পণ করেননি এবং কাউকে বরখাস্তও করা হয়নি। দুজন ছুটির অজুহাতে আর থানায় আসেননি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কিডনি রোগীদের স্বজনদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দেয়। এদিন ওসির মারমুখী আচরণের ফুটেজ অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। মানবিক এ আন্দোলন থেকে একজনকে মারতে মারতে গ্রেপ্তার করেন ওসি নাজিম। এদিন ওসি নাজিম এক নারীকেও লাথি দিয়ে আলোচনায় আসেন। এরপর গ্রেপ্তার মোস্তাকিমকে পুলিশ হেফাজতে মারধরের অভিযোগ ওঠে। তারপরও অজানা কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। যদিও অতীতে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে এমন নির্বিকার দেখা যায়নি।

নিয়ম হচ্ছে থানায় মামলা রেকর্ডের সঙ্গে সঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করতে হবে। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনায় ওসি নাজিম ও এসআই আজিজকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। আইন অনুযায়ী তারা এখন পলাতক রয়েছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুর রশীদ

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) রাতে পাঁচলাইশ থানায় গিয়ে ওসি নাজিম উদ্দিনকে পাওয়া যায়নি। তার কক্ষটি বন্ধ পাওয়া গেছে। থানার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন পরিদর্শক সাদেকুর রহমান।

জানা গেছে, পুলিশ হেফাজতে মারধরের অভিযোগে ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন চমেক হাসপাতালের আন্দোলন থেকে গ্রেপ্তার সৈয়দ মোহাম্মদ মুনতাকিম ওরফে মোস্তাকিম। একই পিটিশনে আসামি করা হয় এসআই আবদুল আজিজকে। আদালত পিটিশনটিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে পাঁচলাইশ থানায় রেকর্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলাটি পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা দিয়ে সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মোস্তাকিম তার মাকে ৭ বছর ধরে ডায়ালাইসিস করান। সম্প্রতি ডায়ালাইসিস মূল্য বেড়ে যাওয়ায় তিনিসহ রোগীর স্বজনরা মিলে আন্দোলন করেন। ঘটনার দিন ১০ জানুয়ারি তারা চমেক হাসপাতালের প্রধান গেটে জড়ো হয়ে মানববন্ধন করেন। পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে এসে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে ওসি নাজিম মোস্তাকিমকে গ্রেপ্তার করে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিচে মারধর করেন এরপর তাকে থানায় নিয়ে পুনরায় মারধর করেন। মারধরের সময় এসআই আবদুল আজিজ মোস্তাকিমকে বলেন ‌‘ওসি নাজিম স্যারের সাথে আর বেয়াদবি করবি?’। এ সময় ওসি নাজিম বলে ‘শালারে রিমান্ডে এনে থানায় পেটাতে হবে, তারপর বুঝবি পুলিশ কি জিনিস?’। এরপর থানায় মারধরের বিষয়টি ফাঁস করলে মোস্তাকিমকে ক্রসফায়ার দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

আদালতের আদেশ পেয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ও মামলার বাদীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওসি-এসআই বলে নয়, তদন্ত কর্মকর্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকেই গ্রেপ্তার করেন না। আমরা তদন্ত করে দেখছি। প্রমাণ পেলে গ্রেপ্তার করা হবে।তদন্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম জেলা-মেট্রো ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) শাহনেওয়াজ খালেদ।

এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশ থানায় নিয়মিত মামলা হয়। নিজের থানায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি হন ওসি নাজিম উদ্দিন এবং এসআই আবদুল আজিজ। তবে মামলা দায়েরের আগের দিন ২১ ফেব্রুয়ারি অসুস্থতা দেখিয়ে  ছুটিতে যান দুজনই।

এ বিষয়ে শুক্রবার (৩ মার্চ) নগর উত্তর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোখলেছুর রহমান  বলেন, পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম ও আবদুল আজিজ দুজনেই ছুটিতে রয়েছেন। অসুস্থতার কারণে তারা ছুটিতে রয়েছেন। থানার দায়িত্ব পালন করছেন পরিদর্শক সাদেকুর রহমান।

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম জেলা-মেট্রো ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) শাহনেওয়াজ খালেদ  বলেন, আদালতের আদেশ পেয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ও মামলার বাদীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে।

আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওসি-এসআই বলে নয়, তদন্ত কর্মকর্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেন না। আমরা তদন্ত করে দেখছি। প্রমাণ পেলে গ্রেপ্তার করা হবে।

তবে চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুর রশীদ বলেন, নিয়ম হচ্ছে থানায় মামলা রেকর্ডের সঙ্গে সঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করতে হবে। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনায় ওসি নাজিম ও এসআই আজিজকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। আইন অনুযায়ী তারা এখন পলাতক রয়েছেন। যতটুকু শুনেছি তারা ছুটিতে রয়েছেন। তারা যোগ দিতে আসলেই গ্রেপ্তার করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করতে হবে। যদি না করেন তাহলে বেআইনি কাজ হবে।

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!