শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫

হয় আমরা জিতব, না হয় মরে যাব: ফখরুল

চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমান ‘সরকারকে লুটপাট ও গণতন্ত্র হরণকারী’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আপনারা নিরাপদে চলে যান। না হলে পালাবার পথও খুঁজে পাবেন না।তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এই দেশে জনগণ আর কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। এটা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন।’

তিনি বলেন, ‘এই চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। এই দেশকে আরেকবার পরাধীনতা থেকে মুক্ত করবার জন্য এই চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড থেকে শুরু হলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার আন্দোলন। চট্টগ্রামের মানুষ যে আগুন জ্বালিয়েছে, সেই আগুনের স্ফুলিঙ্গ সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে। আজ থেকে যে আন্দোলন শুরু হলো, সেটি সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেব। ফয়সালা হবে রাজপথে।’

বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠের বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। সেই সরকার এখানে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই কমিশন সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সম্পৃক্ত করে জনগণের গ্রহণযোগ্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করবে। এর মধ্য দিয়ে একটি পার্লামেন্ট গঠন হবে যেটা হবে জনগণের পার্লামেন্ট। যারা আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, তারাই গঠন করবে পার্লামেন্ট। যদি সেই পার্লামেন্ট গঠিত হয় তাহলেই এই দেশের যতগুলো সমস্যা আছে তা দূর করা সম্ভব হবে।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এসএম ফজলুল হক, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমাবেশের সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীন, হুম্মাম কাদের চৌধুরী প্রমুখ।

সমাবেশস্থলে মঞ্চের দুই পাশে টানানো দুটি ব্যানার দেখিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুই দিকে আমাদের পাঁচ ভাইয়ের ছবি টানানো আছে। এগুলো কাদের ছবি- যারা গণতন্ত্রকে মুক্ত করবার জন্য, মানুষের অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য, জনগণকে অন্যায়-অত্যাচার থেকে মুক্ত করার জন্য শহিদ হয়েছিলেন এগুলো তাদের ছবি। আমরা যখন প্রথম জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, দ্রব্যমূল্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মাঠে নেমেছিলাম, তখন ভোলাতে প্রথম নিহত হন স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুর রহিম। এ ছাড়া ছাত্রদলের নুরে আলম, নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী শাওন প্রধান ও মুন্সীগঞ্জে নিহত হন শাওন ভূঁইয়া।’

‘শাওন প্রধান গাড়ির গ্যারেজে কাজ করতেন। মুন্সীগঞ্জে নিহত শাওন ভূঁইয়া মিশুক চালাতেন। ভোলায় নিহত দুই কর্মীও সাধারণ পরিবার থেকে আসা। আমাদের যেই পাঁচ ভাই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে, দেশের গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছে, তারা সাধারণ মানুষ। এরা কেউ অর্থবিত্তের অধিকারী নয়। ধনসম্পদের মালিক নয়। কিন্তু তারা পুলিশের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। তারা বলেছে, মারো আমাদের, কিন্তু এই দেশেকে মুক্ত করতে চাই। মুন্সীগঞ্জের শাওনের বাবা আমাদের কাছে এসেছিল। তিনি তার ছেলে হত্যার বিচার চান। আজকে আমরা সেই কারণে আপনাদের সামনে এসেছি।’

সমাবেশ মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘৫০ বছর হয়ে গেছে এই স্বাধীনতার। তখন যেমন যুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য, সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমাদের আবার যুদ্ধ করতে হবে। এই লড়াই শক্ত লড়াই। এই লড়াইয়ে আমাদেরকে জিততেই হবে। হয় আমরা জিতব, না হয় মরে যাব। আমরা যদি জয়লাভ করতে না পারি তাহলে এদেশে স্বাধীনতা থাকবে না। আমাদেরকে ‘কলোনীর’ মতো বাস করতে হবে। আমরা মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। এটা কেবল বিএনপির দাবি নয়, এটা এখন সমগ্র জাতির দাবি। ’

‘এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়, জনগণের ভোটের সরকার নয়। তারা ২০১৪ সালে বিনা ভোটে ১৫৪ জনকে নির্বাচিত করে সরকার গঠন করে। পরের বার তারা আগের রাতে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে সরকার ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ গত ১৪-১৫ বছরে এই বাংলাদেশকে শ্মশান করে দিয়েছে। তারা সবকিছু লুট করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে বলেছিলেন, এখন চালের দাম ৭০ টাকা। আবার নাকি বিদ্যুতের দাম বাড়াবে। কেন? লুট করার জন্য? ডাকাতি করার জন্য? অথচ আজ দেশের মানুষ না খেয়ে মরছে। আজকে কোনো নিরাপত্তা নেই। দিনে-দুপরে ডাকতি হয়। র‌্যাবের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। র‌্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কিছু হবে না, নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে এই সরকারকে। কারণ এই সরকারের নির্দেশে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড­ ঘটেছে। জাতিসংঘ পরিষ্কারভাবে বলেছে- বাংলাদেশে মানবাধিকার নেই। এখানে গুম হয়, খুন হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়। আমাদের নেতা তারেক জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে।’

ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচন কমিশন বানিয়েছে, যাকে ডিসি-এমপিরা মানেন না। আমাদের মাতা গৃহবন্দি। চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না। খালেদা জিয়া গণতন্ত্রকে মুক্তি করার জন্য এই দেশের গ্রামে-গঞ্জে চষে বেড়িয়েছেন। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছেন। খালেদা জিয়াকে যে মামলায় গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে, সে মামলায় জামিন দেওয়া যায়। কিন্তু বছরের পর আটকে রেখেছে এই সরকার।’

‘আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এই সরকারকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলছেন- কম খান, কম খরচ করেন। তাহলে আছেন কেন? আমরা ক্ষমতায় এলে চাল-ডাল বিদ্যুতের দাম কমিয়ে আনার চেষ্টা করব, বেকারত্ব দূর করব, মেধার ভিত্তিতে চাকরি দেব। আমরা সেই বাংলাদেশ ফিরে পেতে চাই। এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পতন।’

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!