সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

৬১৫ কোটি ডলার ঋণ চায় বাংলাদেশ

বিশ্বব্যাংকের কাছে দেশের ৫৪টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৬১৫ কোটি (৬.১৫ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। দেশীয় মুদ্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। আগামী ৩ (২০২২-২৫) অর্থবছরের জন্য এ সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ওই হিসাবে প্রতিবছর ২০৫ কোটি বা ২.০৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চায় বাংলাদেশ। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সহযোগী উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ-২০) কাছে ঋণ সহায়তা চেয়ে এ প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে বাজেট সহায়তা হিসাবে এই দাতা সংস্থার কাছে ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তা চাওয়া হয়। ফলে প্রকল্প ও বাজেট সহায়তা মিলে এ পর্যন্ত ৭১৫ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এ তথ্য।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন  বলেন আইডিএ-২০ থেকে প্রকল্পের অনুকূলে ৩৩০ কোটি মার্কিন ডলার পেতে পারে। এই ঋণের ক্ষেত্রে কোন খাতে প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে, প্রকল্পটা কি এসব বিষয় পর্যালোচনা করা হতে পারে। তবে বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা হিসাবে ঋণ চাওয়া হয়েছে। এর বিপরীতে আর্থিক খাত, জ্বালানির মূল্য ও সামাজিক সুরক্ষা এবং বাণিজ্য খাতে সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ বাজেটে সহায়তার ঋণ পাবে।

 

সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ১৯৭২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৩ হাজার ৭৪০ কোটি (৩৭.৪ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই প্রতিশ্রুতির বিপরীতে এ পর্যন্ত সংস্থাটি ২ হাজার ৬৬৪ কোটি ডলার ছাড় করেছে। এ সহায়তার অর্থ দিয়ে দেশের বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন ঘটিয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পানি নিষ্কাশন এবং স্যানিটাইজেশন উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে ঋণের অর্থ। এছাড়া আর্থিক খাতসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সরকারি কর্মকাণ্ডে এ অর্থ ব্যয় করা হয়। বর্তমান বাস্তবায়নাধীন আছে ৫৪টি প্রকল্প। এদের মধ্যে ৭টি প্রকল্পের ব্যয় হবে ২৫৪ কোটি মার্কিন ডলার।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিশ্বব্যাংক যে অর্থ ছাড় করেছে এর বিপরীতে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৬৩৭ কোটি মার্কিন ডলার পরিশোধ করেছে। যার মধ্যে প্রকৃত ঋণের অর্থ ৫৬০ কোটি ডলার এবং সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয় ৭৭ কোটি ডলার। ২০২২ সালে এসে বাংলাদেশের কাছে গ্রস ঋণ পাওনা রয়েছে ১ হাজার ৯৪০ কোটি ডলার। এটি বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণের ৩২ শতাংশ।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশের একটি বড় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বিশ্বব্যাংক। আইডিএ হচ্ছে বিশ্বব্যাংকের সহযোগী উন্নয়ন সংস্থা। গত অর্থবছর (২০২১-২২) বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে ঋণ দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আইডিএ এর মধ্যে বাংলাদেশ ছিল দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে। ওই বছর ঋণপ্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ২১৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। তবে এ পর্যন্ত অর্থ ছাড় করেছে ১৬৭ কোটি ডলার। একই সময়ে ঋণের প্রতিশ্রুতির দিক থেকে শীর্ষে ছিল নাইজেরিয়া। যাদের ২৪০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা। আর ২১২ কোটি ৫০ লাখ ডলারে ঋণ প্রতিশ্রুতি পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল কঙ্গো এবং চতুর্থ ছিল ইথিওপিয়া ১৯০ কোটি ডলারের জন্য।

 

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা আইডিএ বাংলাদেশকে ঋণ দিয়েছে ১৫৭ কোটি ডলার এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে পাওয়া গেছে ১৫১ কোটি ডলার। এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২০৩ কোটি ডলার এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ ঋণ পেয়েছে ১৪২ কোটি ডলার।

 

বাংলাদেশ বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল দেশের মধ্যে একটি। গত কয়েক বছরের মধ্যে শুধু করোনার দুই বছর ছাড়া বাকি সময়ে গড়ে ৭ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। যার অর্থনীতির আকার ৪১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। কিন্তু সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। কিন্তু রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে। সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন দেশে যে রপ্তানি করে আয় হয়েছে সেটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। আর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ কম। একই সময়ে যে রেমিট্যান্স আসছে এটি বিগত ৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সেপ্টেম্বরেও রেমিট্যান্স আয় কমেছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ফলে বেড়েছে বাণিজ্য ঘাটতি। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভের ওপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এই কারণে বৈদেশিক ঋণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক ছাড়াও বাজেট সহায়তা হিসাবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কাছে ১২শ থেকে ১৫শ কোটি বা ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত এডিবির বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংস্থার প্রেসিডেন্টের কাছে এ ঋণ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে চাওয়া হয়েছে ৪৫০ কোটি ডলার।

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!