প্রাণ বাঁচাতে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা শরণার্থী মন্তব্য করে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া উচিত বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরে এবিসি অডিটোরিয়ামে ‘খোলা হাওয়া’ নামক সংগঠন আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ইন ক্রাইসিস’ শীর্ষক এক আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক, ভারতীয় নাগরিক হিসাবে আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, আওয়ামী লীগ করার অপরাধে বা হিন্দু হওয়ার অপরাধে যারা বাংলাদেশ থেকে এখানে পালিয়ে এসেছেন, তাদের দয়া করে জেলে পুরবেন না। আগেও হাসিনা, বঙ্গবন্ধু মুজিবরের পরিবারকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে। আমি অনুরোধ করব, জাত-ধর্ম কিছু দেখতে হবে না, যারা প্রাণ বাঁচাতে ভারতে পালিয়ে এসেছেন, তাদের তাড়াবেন না। তারা শরণার্থী।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা, যাদের পাসপোর্টও কেড়ে নিয়েছে, তাদের জেলে ভরবেন না। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। আওয়ামী লীগের লোকেরা রোহিঙ্গা নন।’
ছয় মাসের মধ্য়ে বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানের সঙ্গে মিশে যায়, তাতে অবাক হবেন না মন্তব্য করে বিজেপি নেতা বলেন, ‘যার সঙ্গে বাংলাদেশের আত্মিক কোনো যোগ নেই, মিস্টার ইউনূস কার্যত এনজয় করছেন, নিজের গ্রামীণ ব্যাংককে রক্ষা করছেন। সম্প্রতি যে কর বসিয়েছেন, তাতে ২০২৯ সাল পর্যন্ত করছাড় পেয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক। অপারেশন ডেভিল হান্ট-এই সব কিছুই ওনার হাতে নেই। হিন্দু সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে শেষ করছে। যদি তারা কিছু বলতে না পারেন, তবে কোনো একদিন সকালে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ জুড়ে যায়, আমি তো অবাক হব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে কার্যত পাকিস্তানই চালাচ্ছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত একদিনও নিজের অফিসে থাকছেন না, তিনি গোটা বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ওখানে যে মৌলবাদী সরকার দেশ চালাচ্ছে, সেখানে বিএনপির কোনো ভূমিকা নেই, আওয়ামী লীগ তো ছেড়েই দিন। জাতীয় পার্টিরও ভূমিকা নেই। কার্যত সকলকে জেলে ঢুকিয়ে দিয়েছে। জামাতের লোকরা চালাচ্ছে, যারা ১৯৭১-এ পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিল। জামাতের অফিসে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসছে, সব কাজে নাক গলাচ্ছে।’
বাংলাদেশের নাগরিকদের সতর্কবার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ওরা সনাতনী হিন্দুদের শূন্য করতে চাইছে আর মুক্তিযুদ্ধের যারা ধারকবাহক, সমর্থক, তাদের বর্ডার গার্ড, শিক্ষা কমিটি, সরকারি দপ্তর থেকে বাদ দিচ্ছে। এমনকী ভাস্কর্যও মুছে ফেলছে। শুধু বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান নয়, রবীন্দ্রনাথের একটা ভাস্কর্যও বাংলাদেশে নেই। চট্টগ্রামে গান্ধীজির স্মারক ভেঙে ফেলা হয়েছে। ইন্দিরা গান্ধীর নামে যে লাইব্রেরি ছিল, তা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা অস্বীকার করার জন্য। এই ধ্বংস যদি বন্ধ না হয়, তবে ওয়ার্ড থেকে সংসদ পর্যন্ত পাকিস্তানের হাতে চলে যাবে। ওয়ান ফাইন মর্নিং বাংলাদেশের পার্লামেন্ট ঘোষণা করবে- পাকিস্তানের সঙ্গে বিভাজনটা ভুল ছিল, আমরা সংযুক্তিকরণ চাইছি।’