সিরিয়ায় সরকারি বাহিনী ও আসাদপন্থী আলাউইত সম্প্রদায়ের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। সম্প্রতি দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় শহর লাতাকিয়া ও তারতুসে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত যোদ্ধারা সমন্বিতভাবে হামলা শুরু করে। বর্তমান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ওপর গুপ্ত হামলা চালায় তারা। এরপরই দ্রুত পাল্টা হামলা শুরু করে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, দুই দিনে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন সেখানে। এর মধ্যে ৭৪৫ জন আসাদপন্থী আলাউইত সম্প্রদায়ের বেসামরিক নাগরিক।
গণমাধ্যমকে লাতাকিয়া শহরের তারতুসের কাছাকাছি এলাকায় চলমান হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, বানিয়াসে আমার বন্ধুর বাগ্দত্তাকে গুলি করা হয়েছে। অস্ত্রধারীরা কাউকে সহায়তা করতে দেয়নি। ফলে রক্তক্ষরণ হয়ে তিনি মারা যান। তাকে এখনও কবর দেওয়া যায়নি।
অস্ত্রধারীরা ঘরে ঘরে ঢুকে মানুষ হত্যা করছে জানিয়ে এই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বুস্তান আল-বাশা গ্রামে আমার চাচি থাকেন। তার সব প্রতিবেশীকে হত্যা করা হয়েছে।
এক নারী প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, অস্ত্রধারীরা নিজেদের এইচটিএসের যোদ্ধা দাবি করলেও তা সঠিক নয়। তারা ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর’ সদস্য। যে ব্যক্তিই পালাতে চেষ্টা করেছেন বা যাকে সন্দেহজনক মনে করছে, তাকেই তারা হত্যা করছে।’
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলের দিকে হাজার হাজার সরকারি বাহিনীর সদস্য পাঠানো হয়েছে। বাশারপন্থীদের দমনে তারা হেলিকপ্টার গানশিপ, ড্রোন ও কামান ব্যবহার করছেন।
একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা হামলা ‘প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ডে’ রূপ নিয়েছে।
সংঘাত এখনো পুরোপুরি থামেনি। রবিবার সংঘাত চতুর্থ দিনে প্রবেশ করেছে। এদিন রাজধানী দামেস্কের মাজ্জাহ পাড়ায় একটি মসজিদে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান আহমেদ আল-শারা সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় ঐক্য ও দেশের শান্তি রক্ষা করতে হবে। আমরা মিলেমিশে বাস করতে পারি। সিরিয়ায় বর্তমানে যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলো যেসব চ্যালেঞ্জ আসবে বলে আগে ধারণা করা, হয়েছিল তারই অংশ।’