ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির মামলার বিচারকাজ বাতিল করতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তার মতো একজন ‘মহান নায়ক’কে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল বুধবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন ট্রাম্প। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর দুর্নীতির বিচারপ্রক্রিয়াকে ‘উইচ-হান্ট’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে নেতানিয়াহুকে ‘একজন মহান নায়ক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন ট্রাম্প।
তিনি লিখেছেন, ‘বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিচার অবিলম্বে বাতিল করা উচিত কিংবা তার মতো একজন মহান নায়ককে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত; যিনি রাষ্ট্রের (ইসরায়েল) জন্য অনেক কিছু করেছেন।’
তিনি আরও লেখেন, ‘নেতানিয়াহু এমন একজন মানুষ যার এত অবদান, তার বিরুদ্ধে এমন বিচার আমার কাছে অকল্পনীয়।’
ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ‘একজন যোদ্ধা’ বলেও প্রশংসা করেন। তিনি লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে রক্ষা করেছিল। এখন যুক্তরাষ্ট্রই নেতানিয়াহুকে রক্ষা করবে।’
এটি সম্ভবত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ ও সমর্থনেরই ইঙ্গিত। তবে যুক্তরাষ্ট্র নেতানিয়াহুকে আইনি লড়াইয়ে সহায়তা করার কথা বুঝিয়েছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলে ২০১৯ সালে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ আনা হয়। তবে এসব অভিযোগের সবই অস্বীকার করেছেন তিনি।
এসব অভিযোগে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে করা তিনটি ফৌজদারি মামলার বিচার ২০২০ সালে শুরু হয়। বিচার চলাকালেও তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, তিনি জানতে পেরেছেন, সোমবার আদালতে নেতানিয়াহুর হাজিরা দেওয়ার কথা রয়েছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ৩ জুন তেল আবিবের একটি আদালতে নেতানিয়াহুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, এ বিচারকাজ শেষ হতে প্রায় এক বছর লাগবে।
এদিকে ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট ইসাক হারজোগ নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তবে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি অনুযায়ী তিনি বলেছেন, ‘এ মুহূর্তে ক্ষমা করার বিষয়টি বিবেচনায় নেই। আর এ ধরনের কোনো অনুরোধ করা হয়নি।’
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন এক সময় এল যখন মাত্র একদিন আগেই তিনি ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরতির পর ইসরায়েলের বোমা হামলার কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘চুক্তি করার সঙ্গে সঙ্গেই ইসরায়েল এমনভাবে বোমা ফেলেছে, যা আমি আগে কখনো দেখিনি। সবচেয়ে বড় আক্রমণ ছিল ওটা। আমি ইসরায়েলের ওপর খুশি নই।’
















