মিরপুরের কাফরুলে ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এই সরকারের দ্রুত বিদায় নেওয়া দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল।’
কচুক্ষেতের একটি রেস্তোরাঁয় বুধবার ইফতারের আগে আগে একদল লোক হামলা চালায় বলে জাতীয় পার্টির অভিযোগ।
দলটির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ইফতার অনুষ্ঠানে কিছু লোকজন হামলা করে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে হামলাকারীদের ‘এলাকা ছাড়া’ করে। পরে তারা ইফতার করেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদেরও ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এত ভয়াবহ স্মরণকালে কেউ দেখিনি। পুলিশ প্রশাসনকে ঢালাওভাবে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা ও মামলা মোকদ্দমা দিয়ে নিস্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে।
গত তিন নির্বাচনে অংশগ্রহণ, মন্ত্রী হওয়া ও বিরোধী দলে থেকেও আওয়ামী লীগ সরকারকে সমর্থন দিয়ে রাজনীতি করায় জাতীয় পার্টিকেও এখন ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর’ বলছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীরা। তাদের রোষানলে পড়ার শঙ্কায় প্রকাশ্যে সেভাবে দলীয় কর্মসূচিও করতে পারছে না জাতীয় পার্টি।
মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারবে কি না, সেই সন্দেহও প্রকাশ করেন জিএম কাদের।
তিনি বলেন, এই সরকার নির্বাচনের নামে প্রহসনের আয়োজন করবে। আমাদের সাথে বৈষম্য করে এই সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। শুধু মিছিল মিটিং নয়, এই সরকারের আমলে ইফতার পার্টিও করতে দিচ্ছে না। তারা নিজেদের লোক দিয়ে একটি রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করেছে। সেই দলকে ক্ষমতাসীন করার জন্য সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করছে। সরকারের সকল পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে নতুন দলটি। এমন পরিস্থিতিতে সঠিক নির্বাচন সম্ভব নয়। এই সরকারের চলে যাওয়া উচিত, তারা দেশ চালাতে পারছে না। এই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনও দিতে পারবে না। আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছে। বর্তমান সরকারের কিছু লোক জ্ঞানী-গুণী। কিন্তু তাদের দেশ চালানোর কোনো অভিজ্ঞতা নাই। তাদের কোনো প্রস্তাব বাস্তবসম্মত হবে না।
দেশ ‘ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে’ মন্তব্য করে জিএম কাদের বলেন, এই সরকার দেশকে বিভক্ত করে ফেলছে। ইসলামী উগ্রপন্থি এবং রক্ষণশীলদের এক করেছে, আর উদারপন্থিদের ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে অপবাদ দিচ্ছে। বর্তমানে দেশে ভিন্ন মতাবলম্বীদের রাজনীতি করার অধিকার নেই, মনে হচ্ছে তাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই। দেশের অর্ধেক মানুষকে বাদ দিয়ে তারা একটি রাজনীতি করতে চাচ্ছে, তাতে দেশ ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে।