গণঅভ্যুত্থানের এক বছরে আমাদের আকাঙ্খা পূরণ হয়নি, নতুন বন্দোবস্ত পাইনি বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করতে সব ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু সমীকরণ এখনও শেষ হয়নি। আমরা জুলাই ঘোষণাপত্রে ছাড় দিয়েছি, কিন্তু জুলাই সনদে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এক শতাংশ ছাড়ও আমরা দেবো না।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এনসিপির যুব উইং জাতীয় যুবশক্তির সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, জুলাই সনদে আমরা ছাড় নয়, এবার আদায় করে নেবো। অন্তর্বর্তী সরকার যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করে এই সরকার যেতে পারবে না।
নাহিদ বলেন, আমাদের নিয়ে যতোই মিডিয়া ট্রায়াল করা হোক, ষড়যন্ত্র করা হোক তরুণদের ক্ষমতায়ন করতে আমরা কাজ করে যাবো। তরুণদের সম্মান দিতে হবে, আমাদের দলের তরুণদের না দিক, অন্য যেকোনো দলের তরুণদেরও সম্মান দিতে হবে।
ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে না: পাটওয়ারী
সম্মেলনে এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না। সে সময় নির্বাচন হলে- যারা শহীদ হয়ে কবরে আছেন, তাদের জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে। আর যে ভাইটি হাত হারিয়েছেন, তার হাত ফিরিয়ে দিতে হবে। এ সময় তার বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন।
পাটওয়ারী বলেন, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড় পাবে না। জাতীয় পার্টি ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। দেশবিরোধী কিছু করতে হলে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে করতে হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে কিছু নেতা টাকার কাছে বিক্রি হচ্ছে। গণমাধ্যমের সম্পাদকরা দালালি করছেন। আগে ছিল হাসিনা মাধ্যম। এখন কী মাধ্যম তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এনসিপির এই নেতা বলেন, সামনে কোনো আয়নাঘর করলে ডিজিএফআইয়ের হেডকোয়ার্টার ভেঙে ফেলবো। দেশে দালাল ব্যবসায়ী তৈরি হয়েছে। শেখ হাসিনাকে ধরে এনে বিচার করতে হবে। জুলাই সনদ আমাদের সন্তানের জন্য ভালো হবে।
গণভবনের পতন হয়েছে আরেকটা ফ্যাসিবাদের কারখানা রয়ে গেছে এখনও। আরেকটা ভবন আছে বঙ্গভবন, সেটার পতন যুবকদের হাত ধরেই হবে।
মামলার ভয় দেখানো যাবে না: সারজিস
সম্মেলনে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম তার বক্তব্যে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করা হয়েছে। এসব মামলা দিয়ে আমাদের ভয় দেখানো যাবে না।
বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান ও ফজলুর রহমানের বক্তব্য শিক্ষার্থীদের আশাহত করে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, তারা বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করে না। আমরা আশাকরি, বিএনপি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।
মিডিয়া পাঁচ আগস্টের আগের রূপ যেকোনো সময় দেখাতে পারে উল্লেখ করে সারজিস বলেন, কয়েকদিন আগে আমরা দেখেছি আগের মিডিয়ার রূপ। এই মিডিয়া ১৩ হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা মানুষের সঙ্গে কক্সবাজারে আমাদের নাস্তা করিয়েছে। যে লোক ওয়াশিংটন ডিসিতে রয়েছে, মিডিয়া তার সঙ্গে আমাদের বৈঠক করিয়েছে।
টেলিভিশন চ্যানেল ওয়ানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা চ্যানেলের নাম দেখে শান্ত থাকবো না। আমরা দেখবো মালিক কে। যে বাদি হয়ে এই কাজ করেছে, সেই বাদির আমলনামা বের করতে হবে। কেঁচো খুড়তে সাপ বের হতে পারে।
কক্সবাজার হোটেলে ইস্যুতে চ্যানেল ওয়ান ‘প্রোপাগান্ডা’ ছড়িয়েছে উল্লেখ করে সারজিস বলেন, মালিক গিয়াসউদ্দিন আল মামুনকে বলতে চাই, এসব অপকাণ্ড আর জনগণ আর মেনে নেবে না।
মিডিয়ার আর গণমানুষের নাই, এখন এজেন্সির: হাসনাত
সম্মেলনে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এই সরকারকে প্রকাশ করতে হবে এক বছরে কী কী করেছে, বিশেষ করে মিডিয়ার। তার অভিযোগ, মিডিয়া এখন আর গণমানুষের নাই, তারা বিভিন্ন এজেন্সির হয়ে কাজ করছে।
মিডিয়ায় নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করছে ডিজিএফআইসহ বেশকিছু সংস্থা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিডিয়া এখন আর গণমানুষের নয়। এটা এখন এজেন্সি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ডিজিএফআইয়ের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।





















