দিনের ভোট রাতে করার অভিযোগ এক বিএনপি নেতার করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে এ আদেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার নুরুল হুদার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
নুরুল হুদা আদালতকে বলেন, নির্বাচনে কারচুপি হওয়ার দায় তার না, রিটানিং কর্মকর্তা থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগিতা না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। তবে এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছিলেন কিনা আদালতের এমন প্রশ্নে নিশ্চুপ ছিলেন তিনি।
শুনানি চলাকালে আদালত নুরুল হুদাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিলে, কারচুপির নির্বাচনের দায় চাপান রিটানিং কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর। তবে রাতের ভোট আয়োজনে নুরুল হুদা সরাসরি সরকারের তাবেদার হয়ে কাজ করেছেন বলে দাবি করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।
রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় ‘মব’ তৈরি করে নূরুল হুদাকে হেনস্তার পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ওইদিন উত্তরার বাসায় ঢুকে একদল লোক নূরুল হুদাকে বের করে আনেন এবং জুতার মালা পরিয়ে দেন। একই সঙ্গে তাদের জুতা দিয়ে পেটান। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিও দেখা যায়।
এদিকে সাবেক এই সিইসির সঙ্গে ‘মব’ ঘটেছে উল্লেখ করে এর ঘটনা নিন্দা জানিয়েছে সরকার ও বিএনপি। মব জাস্টিস কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নুরুল হুদাকে আটকের সময় যেভাবে মব জাস্টিস করা হয়েছে তা কাম্য নয়।
অপরদিকে বিএনপি ‘মব’ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার মবকাণ্ডে দলের কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে ডিসিপ্লেনারি অ্যাকশন নেওয়া কথা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া এবং তার বিচার প্রক্রিয়ায় আইনি যথাযথভাবে পরিচালিত হবে এটা আমরা প্রত্যাশা করি। তবে তার ওপরে যে অবমাননাকর ব্যবহার করা হয়েছে এটা আমরা সমর্থন করি না।
আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আসামি করে রোববার (২২ জুন) মামলা করেছে বিএনপি। মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহউদ্দিন খান বাদি হয়ে এ মামলা করেন। ওই মামলায় নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।