সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

আর্থিক খাতে লুটপাটের দায় জনগণ শোধ করবে কেন?

নজিরবিহীনভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার। জনসাধারণ নতুন করে আর্থিক চাপের মুখে পড়বে। প্রাত্যহিক জীবনের খরচ বাড়বে সর্বত্র। এই চাপ সামাল দেওয়ার সংগতি সাধারণ মানুষের নেই। কেবল জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতেই এর শেষ হবে না। এর পিছু পিছু বিদ্যুতের দাম বাড়বে। পরিবহন খরচ বাড়বে। বাসাভাড়া ও বাজারের ফর্দে অতিরিক্ত অর্থ খরচ হিসাবে নতুন করে যুক্ত হবে। নাগরিকের গলায় ব্যয়ের ফাঁস আরও শক্ত করে এঁটে বসবে। এখনই দম ফেলার আর সুযোগ থাকছে না।

 

অথচ এমন একসময় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো, যখন বিশ্ববাজারে দাম কমেছে খুচরা ও পাইকারি উভয় পর্যায়েই। রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা করলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ১৩৯ ডলার পর্যন্ত উঠেছিল ব্যারেলপ্রতি। এখন ৯০ ডলারে নেমে এসেছে। বিভিন্ন জ্বালানি তেলবিষয়ক সংস্থার পূর্বাভাস হচ্ছে এ বছরের শেষ নাগাদ ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারে নেমে আসবে। বিশ্ববাজারে যখন ধীরে ধীরে স্বস্তি ফিরে আসছে, তখনই আমাদের বাজারে দাম বাড়িয়ে চরম অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিল সরকার।

মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে সরকার ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে। প্রথমত, বিশ্ববাজারে সংকট ও মূল্যবৃদ্ধিকে মূল কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসান কামানো ও ভারতে পাচাররোধকেও মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আইএমএফের শর্তকে দায়ী করেছে। সম্প্রতি সরকার আইএমএফের কাছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে। ঋণ প্রদানের শর্ত হিসেবে আইএমএফ ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ দিয়েছে বলে এই দলগুলো অভিযোগ করেছে এবং এই পরামর্শ মোতাবেক সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি হ্রাসের উদ্যোগ নিয়েছে।

এই হচ্ছে মোটাদাগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির জন্য সরকারি ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর যুক্তি।

উল্লেখ্য, আমাদের দেশে কখনোই আইন মেনে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয় না। আইন অনুসারে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গণশুনানি করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেবে। গণশুনানির ৯০ দিনের মধ্যে সরকার তেলের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করবে। কিন্তু এই নিয়ম কোনো সরকারের আমলেই মানা হয়নি। প্রতিবারই সরকার ও আমলারা মিলে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করেছে এবং রাতের বেলায় সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। এবারও সরকার এই ধারা থেকে বের হতে পারেনি। রাতের আঁধারেই ৪২ থেকে ৫১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম।

সরকারের মূল্যবৃদ্ধির কোনো যুক্তিই গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্ববাজারে সর্বোচ্চ দাম থাকার সময় সরকার ভর্তুকি দিয়েছে। এখন দাম কমার সময় অযৌক্তিকভাবে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ হারে দাম বাড়িয়েছে। কারণ হিসেবে বিপিসির লোকসানের কথা বলা হচ্ছে। জুলাই মাসে বিপিসি ডিজেল ও অকটেনে ৭৮ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকে লোকসানের পরিমাণ ৮ হাজার ১৪ কোটি টাকা। অথচ ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে বিপিসি জ্বালানি তেল বিক্রি করে লাভ করেছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা।

ফলে দেখা যাচ্ছে, বিপিসির লোকসানের যে কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তা সর্বাংশে সঠিক না। তর্কের খাতিরে সরকারের যুক্তি মেনে নিয়েই বলতে হবে বিপিসি এখনো লাভেই আছে। ফেব্রুয়ারি থেকে লোকসানের অর্থ বাদ দিলেও বিপিসির হাতে এখনো ৩৫ হাজার কোটি টাকা থাকার কথা। এই অর্থ থেকে সরকার জ্বালানিতে ভর্তুকি দিতে পারত। না দিয়ে সরকার অন্য খাতে এই ব্যয় করছে। এ ছাড়া সরকার জ্বালানি তেল আমদানিতে ৩৭ শতাংশ শুল্ক–কর আদায় করে। এখানে সরকার শুষ্ক–কর কমাতে পারত।

Facebook
X
WhatsApp
Email
Telegram
সর্বশেষ
ফেসবুক নেটওয়ার্ক ও পার্টনার পেজ
মিডিয়া
Cover for Table Talk Uk
595,824
Table Talk Uk

Table Talk Uk

Table Talk UK Discusses the political and social issues of the country. Our only purpose is to expose social inconsistencies and politics in the face of accountability on the path to democracy and talk about the rights of people.

This message is only visible to admins.
Problem displaying Facebook posts. Backup cache in use.
PPCA Error: Due to Facebook API changes it is no longer possible to display a feed from a Facebook Page you are not an admin of. The Facebook feed below is not using a valid Access Token for this Facebook page and so has stopped updating.

Smash Balloon Custom Facebook Feed WordPress Plugin The Custom Facebook Feed plugin

সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!
সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
কপিরাইট © 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত — লন্ডন মিরর।
সম্পাদক: হাসিনা আক্তার
সার্চ করুন
লগইন/সাইন আপ
সর্বশেষ সংবাদ জানতে—এখনই সাবস্ক্রাইব করুন!