ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর ‘চিরশত্রু’ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিলো তেহরান। তবে শেষ পর্যন্ত ‘ব্যবস্থাপনাগত কারণে’ তারা সেটা দিতে পারেননি বলে জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্টেট ডিপার্টমেন্টের সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ তথ্য সামনে আনেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইরান সরকারের কাছ থেকে আমাদের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছিলো। আমরা বলেছিলাম- আমরা সহায়তা করতে ইচ্ছুক। আমরা এমন পরিস্থিতিতে যে কোনো সরকারকেই সহায়তা করতে চাই। তবে শেষ পর্যন্ত মূলত লজিস্টিক্যাল কিছু কারণে, আমরা ইরানকে সেই সহায়তা দিতে পারিনি।
এই বিষয়ে আরও বিস্তারিতভাবে তথ্য প্রকাশ করতে বা দুই দেশের মধ্যে কীভাবে যোগাযোগ হয়েছে, তা বর্ণনা করতে অস্বীকার করেন ম্যাথিউ মিলার।
এদিকে আকস্মিক এক ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা ইব্রাহিম রাইসির ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বহরে থাকা তিনটি হেলিকপ্টারের মধ্যে দুটি নিরাপদে ফিরে এলেও রাইসির বহনকারী কপ্টার আগুনে ভস্ম হয়ে যাওয়ার প্রকৃত কারণ নিয়ে এখন রহস্যের জাল বিস্তার হচ্ছে।
এরইমধ্যে এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। ইরানের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ বাঘেরি হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছে, মিশন শেষ হলে তদন্তের ফলাফল ঘোষণা হবে।
অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী মিডিয়া ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিধ্বংসী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইব্রাহিম রাইসি নিহত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে ইসরাইলের কোনো সম্পর্ক নেই বলে ঘোষণা করেছে দেশটির কর্মকর্তারা।
ইরানি ও তুর্কি সংবাদ সংস্থার ড্রোন ফুটেজে প্রকাশ করা হয়েছে যে, হেলিকপ্টারটি জরুরি অবতরণ করার সময় ভেঙে পড়েছিলো। তবে ইরানি রেড ক্রিসেন্টের শেয়ার করা ক্লিপগুলোতে দেখা যায়, উদ্ধারকারীরা দুর্ঘটনাস্থলের আশেপাশের জঙ্গল থেকে স্ট্রেচারে করে আচ্ছাদিত মরদেহ নিয়ে যাচ্ছে।
আর রহস্যজনক এই হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার প্রকৃত কারণ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার ডালপালা ছড়িয়ে পড়ছে এবং এ ঘটনায় ইসরাইলে দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে বলে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রোববার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। সেখান থেকে তাবরিজে ফেরার পথে জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।
রাইসির বহনকারী হেলিকপ্টার এতোটাই দুর্গম জায়গায় বিধ্বস্ত হয় যে, অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দলগুলো রাতভর ঘন কুয়াশার মধ্যে পাহাড়ি এলাকা ঘুরে দেখেও ঘটনাস্থলের সন্ধান পেতে হিমশিম খান। বিধ্বস্তের পর হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মৃত্যু হয় এতে থাকা সবার।













The Custom Facebook Feed plugin